পা কেটেও ক্যান্সার থেকে বাঁচানো গেলোনা শিশু ফাহিমকে

সভ্যতার চরম উৎকর্ষতায় চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিপ্লবে ক্যান্সার এখনো একটি কর্কশ মরণব্যাধি। এই মরণব্যাধি ক্যান্সারের কাছে হেরে গেল ১৪ বছর বয়সী শিশু মোঃ ফাহিমের জীবন। রোববার (২৪ মার্চ) রাত ১১টায় বাঁশখালী উপজেলার সাধনপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে বৈলগাঁও গ্রামের পিত্রালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফাহিম শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করে। গত এক বছরের আগে স্থানীয় মাঠে ফুটবল খেলতে গিয়ে তার ডান পায়ে আঘাত পায়। পরে ডান পা কেটে ফেলা হয়। গত নভেম্বর মাসের দিকে শিশু ফাহিমের এই কর্কশ মরণব্যাধি ক্যান্সার ধরা পড়ে। সেই থেকে অটোরিকশা চালক গরীব বাবা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসা করান। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখান। একপর্যায়ে ছেলের চিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবানদের প্রতি আর্থিক সহায়তার হাতও বাড়ায় ফাহিমের দরিদ্র্য বাবা। অনেকে শিশু ফাহিমের চিকিৎসার জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। তবুও শেষ রক্ষা হয়নি ফাহিমের।

মো. ফাহিম বাঁশখালী উপজেলার সাধনপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব বৈলগাঁও গ্রামের মো. শহিদুল ইসলাম ও কামরুন্নাহার দম্পতির বড় ছেলে। শহিদুলের তিন ছেলে, এক কন্যা সন্তানের মধ্যে ফাহিম সবার বড়। ফাহিমের বাবা একজন অটোরিকশা চালক। ছেলেকে হারিয়ে পিতা এখন নির্বাক।

ফাহিমের বাবা শহিদুলের সাথে কথা বলে জানা যায়, ‘ঘটনার পরে আস্তে আস্তে তার পা ফুলতে থাকে। প্রথমে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় তাকে। চিকিৎসা চলে সেখানের ডাক্তারের পরামর্শে। পরে চকরিয়ার ডুলাহাজারা এরপর নগরীর শেভরণে চিকিৎসা চলে তার। ইতিমধ্যে তার ডান পায়ের ভিতরে পচন ধরেছে। চমেকে চিকিৎসারত অবস্থায় আজ থেকে ৪ মাস আগে সেখানের ডাক্তার জানিয়েছেন ফাহিমের পায়ের পচন থেকে ক্যান্সার হয়েছে! ডাক্তারের পরামর্শে অগত্য শিশুটির ডান পা কেটে ফেলতে হয়। একজন দুরন্ত ডানপিটে শিশুর হাসিখুশি জীবনে নেমে আসল অন্ধকার। থেমে গেল একটি শিশুর সুস্থ শৈশব। বন্ধ হয়ে গেল স্কুলে যাওয়া। এরপরও রিকশা চালক অসহায় বাবা বিভিন্ন সহায়তায় ছেলের অপারেশন করালেও পাঁচটা ক্যামোথেরাপির খরচ বহনের সক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। চমেকের ডাক্তারের পরামর্শে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সর্বশেষ তাকে মৃত্যুর কাছে হার মানতে হলো। রোববার রাত ১১টায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে ফাহিম। সোমবার সকাল ১১টায় পূর্ব বৈলগাঁও নয়া দিঘীর পাড় স্থানীয় জামে মসজিদের মাঠে জানাজা শেষে গণকবরস্থানে ফাহিমকে দাফন করা হয়েছে।

আরও পড়ুন