কেটেছে লবণ মাঠের পলিথিন, অভাগা চাষী তাই দিশাহীন

লবণ মাঠের পলিথিনের সাথে এ কেমন শত্রুতা! একদিকে লবণের মূল্যে ধস, অন্যদিকে দাদন ব্যবসায়িদের টাকা শোধ করার জন্য লবণ উৎপাদনে যুদ্ধ নেমেছে প্রান্তিক চাষীরা। এমতাবস্থায় স্থানীয় অসহায় এক চাষীর লবণ মাঠের পলিথিন কেটে দিয়েছে একদল দুর্বৃত্ত। এতে লবণ চাষীর অনুমানিক ৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে ভুক্তভোগী লবণ চাষী আবদুল মাবুদ।
ঘটনাটি ঘটেছে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলার লেমশীখালী ইউনিয়নের মতির বাপের পাড়া এলাকায়। বুধবার রাতে মতির পাড়ার আবদুল মাবুদের লবণ মাঠের পলিথিন কেটে দেয় দুর্বৃত্তরা।

জানা যায়, আবদুল মাবুদের বাবা সমুদ্রে মাছ শিকার করতে গিয়ে আর ফিরে আসেনি, তারা নানার বাড়ীতে বসবাস করে আসছে। নানার সাথে স্থানীয় কয়েকজনের জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। সম্ভবত সেই শত্র‚তার জের ধরে রাতের অন্ধকারে লবণ মাঠের পলিথিন কেটে লবণ উৎপাদন ব্যাহত করেছে বলে দাবী আবদুল মাবুদের নানা বদি আলমের (৭৫)।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,‘এক সনা’ হিসেবে উত্তর কৈয়ারবিল এলাকার লবণ ব্যবসায়ী মোঃ সেলিমের কাছ থেকে মৃত রেজাউল করিমের ছেলে আবদুল মাবুদ ২.৪০ একর মাঠ লবণ চাষের জন্য নেয়।একদল দুর্বৃত্ত লবণ মাঠের পলিথিন কেটে ‘অর্ধ ফুটন্ত’ লবণ নষ্ট করে ফেলে। পরের দিন সকালে লবণ মাঠে গিয়ে চাষী আবদুল মাবুদ এ অবস্থা দেখে হতবিহব্বল হয়ে পড়েন।
লবণচাষী আবদুল মাবুদ জানান, ছোট বেলায় বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে অনেক কষ্ট করে পরিবার চালাচ্ছি। যা আয় করতাম তাদিয়ে সংসার চলত। এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে লবণ মাঠ শুরু করি। এনজিওর টাকা লবণ মাঠের টাকা এখনও পরিশোধ হয়নি। আমার এত বড় ক্ষতি কেন করল? এখন আমি ঋণ কিভাবে পরিশোধ করব।

লবণচাষী আবদুল মাবুদের মা কুনছুমা জানান, ৮ বছর আগে স্বামী সমুদ্রে মাছ শিকারে গিয়ে আর ফিরে আসেনি। তিন মেয়ে এক ছেলে নিয়ে বাপের বাড়িতে বসবাস শুরু করেন কুনছুমা। এক মাত্র পুত্র সন্তান আবদুল মাবুদ ছোট বেলা থেকে উপার্জন করে সংসার চালান। তিনটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ৬ কানি লবণ মাঠ শুরু করেন। এখনও সেই ঋণ পরিশোধ করা হয়নি। রাতের আধারে প‚র্ব শত্রুতার জের ধরে তার পরিবারের এমন ক্ষতি করেছে বলে দাবী করেন তিনি।

সরেজমিন পরিদর্শন করে কুতুবদিয়া থানার উপপরিদর্শক হাবিবুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, লেমশীখালী ইউনিয়নের মতি বাপের পাড়া গ্রামে লবণ মাঠের পলিথিন কে বা কাহারা কেটে দিয়েছে, ভুক্তভোগীকে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান।

আরও পড়ুন