কক্সবাজার সদরের কলাতলি উত্তরণ আবাসিক এলাকায় খেলার মাঠের পাশে সালামত উল্লাহ (৩৫) নামের রাজমিস্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় দুই ধরনের বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে। নিহতের পরিবার এটিকে আত্মহত্যা বললেও এলাকাবাসী ও বাবার পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশও এটিকে আত্মহত্যা বলে দাবি করছে। এদিকে ঘটনার পর থেকে তাঁর স্ত্রী পলাতক রয়েছে। নিহত সালামত উল্লাহ কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড ইসলামাবাদ এলাকার শাহজাহান বার্বুচির ছেলে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) রাত ৮ টার দিকে কক্সবাজার কলাতলি উত্তরণ আবাসিক এলাকার উত্তর পাশে খেলার মাঠ সংলগ্ন সালামত উল্লাহর লাশ গাছের সাথে ঝুলে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি শেষে ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার এসআই মো. নোমান মৃতদেহের সুরতহাল রিপোর্টে উল্লেখ করেন, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক বিরোধের জের হিসেবে মানসিক যন্ত্রণায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে গাছের সাথে ঝুলে রাজমিস্ত্রী সালামত উল্লাহ আত্মহত্যা করেছে মর্মে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে পক্ষে-বিপক্ষে বক্তব্য থাকায় মৃতদেহ জেলা সদর হাসপাতাল পাঠানো হয়েছে।
নিহত সালামত উল্লাহর ভাগীনা হোসাইন ইমন বলেন, মামী তাকে ফোন করে মামা সালামতের মৃত্যুর খবরটি জানান। মামার এক সন্তান রয়েছে। মামাকে হত্যা করা হয়েছে নাকি আত্মহত্যা করেছে তা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। তবে, মামীর সাথে প্রায় সময় পারিবারিক কলহ লেগেই থাকত। আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরেও মামা আর মামীর মধ্যে ঝগড়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, রাজমিস্ত্রী সালামত উল্লাহকে হয়তো হত্যা করা করেছে। এরপর তাঁর গলায় রশি প্যাঁচিয়ে গাছের সাথে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। এলাকাবাসী আরও জানান, প্রায় এক বছর আগে বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহের সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে এলাকায় বেশ কয়েকবার সালিশও হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে নিহত সালামত উল্লাহ তার মাকেও বলেছে স্ত্রীর সাথে ঝগড়া করার কারণে সে আত্মহত্যা করবে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, রশি দিয়ে যেভাবে লাশটি গাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে, তাতে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে মনে হচ্ছে না।
স্থানীয় ইউপি মেম্বার মো. ইউনুচ বলেন, প্রায় ৫/৬ বছর আগে একই এলাকায় তাঁরা দুজন বিয়ে করেন। কিছুদিন পরই তাঁদের মধ্যে পারিবারিক কলহ দেখা দেয়। প্রায়ই তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকত।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মো. সেলিম উদ্দিন জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক অবস্থায় এটি আত্মহত্যা হিসেবে ধারনা করা হচ্ছে। পোস্টমর্টেমের পর আসলে এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যা জানা যাবে।