৯ রোহিঙ্গা কিশোর অপহরণের অভিযোগে গ্রেপ্তার ৯

কক্সবাজারের উখিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্পে আবারও মাথা চড়া দিয়ে উঠেছে অপহরণ ও মানব পাচারকারী চক্রের সদস্যরা। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২ জুলাই দুপুর ১১ টার দিকে ১৩ নম্বর ক্যাম্পের ৩ রোহিঙ্গা কিশোরকে কাজের প্রলোভন দেখিয়ে টেকনাফ নিয়ে যায় অপরাধ চক্রের সদস্যরা। একই অপরাধী চক্র একই কায়দায় ৬ জুলাই বৃহস্পতিবার একই ক্যাম্প ও আশপাশের এলাকা থেকে আরও ৬ জন রোহিঙ্গা কিশোরকে অপহরণ করে টেকনাফে নিয়ে যায়। উক্ত অপহরণের ঘটনায় উখিয়ার ৮ এপিবিএনের সদস্যরা টেকনাফে অভিযান চালিয়ে জীবিত ৩ রোহিঙ্গা কিশোরকে উদ্ধার করে। অপহরণের ঘটনায় উখিয়ার কুতুপালং ও টেকনাফের দক্ষিণ লম্বরি এলাকার বিভিন্ন দুর্গম স্থানে অভিযান চালিয়ে অপহরণ চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে।

উদ্ধারকৃত রোহিঙ্গা কিশোররা হলেন,১৩ নম্বর ক্যাম্পের সোনা মিয়ার মোহাম্মদ হাসান (১৪), মোহাম্মদ তাহের এর ছেলে আনিসুর রহমান (১৩) ও ইলিয়াস এর ছেলে সৈয়দ নুর(১২)।

গ্রেপ্তারকৃত অপহরণ ও মানব পাচারকারী চক্রের ৯ সদস্যরা হলেন,নুরুল আমিন (৩২)মো: ফয়সাল (১৮) শফিকুল (১৮) সাইফুল ইসলাম (২২) মিজানুর রহমান (১৮) আব্দুর রহমান (১৭) মোহাম্মদ পারভেজ (১৪) মো: মোবারক (১৭) মো: আমিন (১৭) কে গ্রেপ্তার করা হয়।

শুক্রবার ভোর থেকে শনিবার রাত পর্যন্ত উখিয়ার কুতুপালং ও টেকনাফের দক্ষিণ লম্বরি এলাকার বিভিন্ন দুর্গম স্থানে অভিযান চালিয়ে ৩ রোহিঙ্গা কিশোরকে উদ্ধার ও ৯ অপহরণ ও মানব পাচারকারী চক্রের ৯ জনকে গ্রেপ্তার করে।

শনিবার ৮ জুলাই বিকাল ৫ টার দিকে এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য নিশ্চিত করেছেন ৮ এপিবিএন এর সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ ফারুক আহমেদ।

তিনি আরও জানান, গত ২ জুলাই ১৩ নম্বর ক্যাম্প থেকে ৩ রোহিঙ্গা কিশোর ও ৬ জুলাই একই ক্যাম্প থেকে একই কায়দায় ৬ রোহিঙ্গা কিশোরকে অপহরণ ও মানব পাচারকারী চক্রের সদস্যরা অপহরণ করে নিয়ে যায়।উক্ত সংবাদের ভিক্তিতে ৮ এপিবিএন এর অধিনায়ক (অ্যাডিশনাল ডিআইজি) মো: আমির জাফর বিপিএম এর নির্দেশনায় মো: ফারুক আহমেদ সহকারী পুলিশ সুপার এর নেতৃত্বে পুলিশ পরিদর্শক (নি:) মো: রবিউল ইসলাম, এসআই (নি:) সঞ্জয় দত্ত সঙ্গীয় ফোর্স সহ বিভিন্ন উৎস ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার ভোর থেকে শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালনা করে ৩ রোহিঙ্গা কিশোরকে উদ্ধার ও অপহরণ ও মানব পাচারকারী চক্রের ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, এ চক্রের সদস্যরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা হতে সুপারির কাজ/ অন্য কোন কাজের প্রলোভনে টেকনাফের দক্ষিণ লম্বরি এলাকায় সুপারি বাগানের ভিতরে নির্জন স্থানে বিশেষ কৌশলে আটক রাখে।
অত:পর ভিকটিমদের চোরা পথে নৌকাযোগে মিয়ানমার এর শামিলা এলাকায় প্রেরণ করতঃ আটক রেখে সংশ্লিষ্ট অভিভাবকদের নিকট সুকৌশলে বড় অংকের টাকা আদায় করে মুক্তি দেয়। অনেক সময় এই অপরাধ প্রক্রিয়ার বিভিন্ন ধাপে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাও ঘটে।

গ্রেপ্তারকৃতদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ ও বিস্তৃত তদন্তের মাধ্যমে অপহৃত অন্যান্য ভিকটিমদের উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।

আরও পড়ুন