উখিয়ায় বনের গাছ সাবাড় করছে অর্ধ-শতাধিক অবৈধ স‘মিল

কক্সবাজারের উখিয়ার বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গা বিপুল চাহিদাকে পুঁজি করে এক শ্রেণীর অসাধু চক্র বনের গাছ কাটছে নিয়মিত। এছাড়া পাহাড় কেটে মাটি পাচার, খাল, ছড়া, নদী থেকে বালি উত্তোলন, বনভূমি দখল, বিক্রি অব্যাহত রেখেছে। বিশেষ করে স্থাপনা নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত কাঠ চিড়াইয়ের মাধ্যমে সম্পূর্ণ অবৈধ উপায়ে বাজারজাত করা হচ্ছে। সরকারি বন সম্পদ ধ্বংসের কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রদানব খ্যাত অবৈধ প্রায় অর্ধশতাধিক করাত কলে দিবারাত্রী সাইজ করা হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির কাঠ সম্পদ। পরিবেশবাদী সচেতন ব্যক্তিবর্গের অভিযোগ, বনকর্মীদের নাকের ডগায় প্রকৃতি ধ্বংস চলতে থাকলেও প্রতিরোধের উদ্যোগ নেই।

পরিবেশ সংরক্ষণে নবগঠিত সংগঠন কক্সবাজার সোসাইটিজ এর সভাপতি সাংবাদিক ফজলুল কাদের চৌধুরী জানান, উখিয়া টেকনাফে রোহিঙ্গা আশ্রয়ের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অনেকেই নানা অপকর্মের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অপকৌশল অবলম্বন করে প্রকৃতির উপর ভয়ংকর আঘাত হেনেছে। যা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পরবর্তী ২০ বছরেও পূরণ হওয়ার কথা নয়।
তিনি বলেন, সরকারি দায়িত্বপ্রাপ্ত বনকর্তারা যদি নিজ দায়িত্বে অবিচল থাকতো তাহলে নির্বিচারে পাহাড় কাটা, অবৈধ বালি উত্তোলন, বনভূমি দখল হস্তান্তর ও বন সম্পদ ধ্বংসের কাজে ব্যবহৃত করাত কল গুলো আইনের আওতায় নিয়ে আসা তাদের পক্ষে সম্ভব হতো। তাহলে গত সাড়ে ৫ বছরে যে পরিমাণ পরিবেশের ক্ষতি হয়েছে তা হয়তো আরো কমিয়ে আনা যেত। তিনি জলবায়ু পরিবর্তনেরমত ভয়বহ পরিবেশ বিধ্বংসী তান্ডব প্রতিরোধে এগিয়ে আসার জন্য সচেতন মহলের প্রতি আহবান জানান।
এলাকার থাইংখালী, কুতুপালং, কচুবনিয়া, বালুখালী, পালংখালী, ফলিয়াপাড়া, হাজির পাড়া, হরিণমারা, কোটবাজার, ঝাউতলা, ভালুকিয়া, মরিচ্যা. রুমখা বাজার এলাকাসহ বিশেষ বিশেষ জনগুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বসানো হয়েছে প্রায় অর্ধশতাধিক অবৈধ মিনি সমিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এসব অবৈধ সমিলে প্রতিদিন হাজার হাজার ঘনফুট কাঠ চিড়াই করা হচ্ছে। যা সংগ্রহ করা হচ্ছে সরকারি বনাঞ্চল থেকে। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, এসব অবৈধ সমিল প্রতিষ্ঠার নেপথ্যে বন বিভাগ সংশ্লিষ্ট কতিপয় বনকর্মীর হাত রয়েছে। তা না হলে প্রশাসন এসব অবৈধ সমিল উদ্ধারে অভিযান চালানোর আগেই সংশ্লিষ্টরা নিরাপদে সমিল গুলো সরিয়ে নিতে সক্ষম হয় কি ভাবে।

এব্যাপারে জানতে চায়লে উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা গাজী শফিউল আলম জানান গেল সপ্তাহের মধ্যে উখিয়া বিভিন্ন এলাকা থেকে ৫টি করাত কল জব্দ করা হয়েছে। বিপুল পরিমাণ কাঠ উদ্ধার করা হয়েছে।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান হোসেন সজীব জানান, জীববৈচিত্র ও পরিবেশ রক্ষার্থে অবৈধ সমিল গুলো আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

আরও পড়ুন