তিনদিন আগে কাউকে কিছু না বলে হুট করেই দেশে আসে সাজ্জাদ হোসেন (২২)। ঘরে থাকা মা, ছোট ভাই এমনকি বিদেশে বসবাসরত আপন দুই ভাইদেরও কিছু না বলে দেশে চলে আসে। কে জানতো ৬ বছর পর দেশে আসা সাজ্জাদের জীবন প্রদীপ এভাবে নিভে যাবে।
গতকাল রবিবার (২৮ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাউজান পৌর এলাকার চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি সড়কের বাইন্যা পুকুরপাড়ে মর্মাত্মিক এক দুর্ঘটনায় সাজ্জাদের করুণ মৃত্যু হয়। এঘটনায় গুরুতর আহত হয় আরও ১জন। সে নিহত সাজ্জাদের ফুফাতো মো. মিরাজ (১৮)। মিরাজকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্যে পাঠানো হয়।
নিহত সাজ্জাদ উপজেলার ৭নং রাউজান সদর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মিয়াজান মাঝির বাড়ির মরহুম আব্দুস সালামের ছেলে। চার ভাইয়ের মাঝে সাজ্জাদ তৃতীয়। কয়েক বছর আগে অসুস্থতায় তাদের পিতা মারা যান।
অন্যদিকে আহত মিরাজ একই ইউনিয়নের পূর্ব রাউজান এলাকার মো. মনছুরের ছেলে। তবে সে ছোট থেকেই মায়ের সাথে নানার বাড়িতে থাকে।
স্থানীয়রা জানান, মোটরসাইকেল যোগে নিহত সাজ্জাদ ও তার ফুফাতো ভাই পৌর এলাকার বাইন্যা পুকুরপাড় হয়ে রাউজান সদরের দিকে আসছিলেন। পথিমধ্যে ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে ঘটনাস্থলে নিহত হয় সাজ্জাদ। গুরুতর আহত হয় মিরাজ। সেখান থেকে দুইজনকে উদ্ধার করে দ্রুত গহিরা জে কে হসপিটালে নেয়া হয়। হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক সাজ্জাদকে মৃত ঘোষণা করে। আহত মিরাজকে চট্টগ্রাম মেডিক্যালে পাঠিয়ে দেয়।
নিহত সাজ্জাদের পরিবারের সদস্যরা জানান, সাজ্জাদ ৬ বছর ধরে ওমানে আছে। তার বড় দুই ভাইও দুবাই থাকে। গত তিনদিন আগে হুট করেই দেশে চলে আসে। কাউকে কিছু জানায়নি। এমনকি প্রয়োজনীয় কাপড়ও নিয়ে আসেনি। সকালে ঘরে জানায় কাপড় কিনতে রাউজান ফকিরহাট যাবে। পরে সবাই জানতে পারে দুর্ঘটনা হয়েছে।
এই বিষয়ে রাউজান হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুল আজম বলেন, লাশের সুরতহাল সম্পন্ন হয়েছে। নিহত সাজ্জাদের পরিবার পোস্ট মর্টেম করতে চাচ্ছেন না। তাই লাশ তাদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে তারা চাইলে মামলা করতে পারবেন। তিনি আরও বলেন, ঘাতক ট্রাক চালক পালিয়ে গেছে। তবে ট্রাকটি আটক করা হয়েছে।