মসজিদ দখল ও সম্পত্তি আত্মসাতের পরিকল্পনার প্রতিবাদে আইনি প্রতিকার চেয়ে সাংবাদিক সম্মেলন

চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নাছির মোহাম্মদ পাড়া এলাকায় ‘হযরত শামসের আউলিয়া প্রকাশ শ্যাম আউলিয়া জামে মসজিদ (এহছান আলী আফজল মিয়া) ওয়াকফ এস্টেট’ এর মসজিদ দখল ও সম্পত্তি আত্মসাৎ কল্পে দীর্ঘ ১৭ বছর যাবত চক্রান্তকারী এলাকার চিহ্নিত দুর্বৃত্তচক্র কর্তৃক মোতওয়াল্লী পরিবারের ওপর বারংবার সন্ত্রাসী হামলা, মিথ্যা মামলা ও হয়রানির প্রতিবাদে এবং সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক আইনী প্রতিকারের দাবীতে বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকালে পৌর সদরস্থ আলহাজ্ব আফজল মিয়া সওদাগর সল্ট রিফাইনারী অফিসে হযরত শামসের আউলিয়া প্রকাশ শ্যাম আউলিয়া জামে মসজিদ (এহছান আলী আফজল মিয়া) ওয়াকফ এস্টেট এর পক্ষে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন মোতওয়াল্লি মাওলানা খোরশেদ আলম রেজভী।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমার পিতামহ মরহুম এহছান আলী কর্তৃক ওয়াকফকৃত ১২শতাংশ জমির উপর বর্তমান মসজিদটি নির্মিত হওয়ায় আমার পিতার জীবদ্দশায় ও আমার মোতওয়াল্লীকালীন প্রথম ২০ বছরকাল অত্র মহল্লাবাসী বা আলমগীর গং (বর্তমান বিবাদীপক্ষ) কিংবা তাদের পিতামহ বা পিতা কেউ-ই কোনরূপ অভিযোগ বা আপত্তি উত্থাপন করেনি। কিন্তু হঠাৎ গত ২০০৭সাল অর্থাৎ মসজিদটি প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ৪০ বছর পর আমার পিতার ওয়াকফকৃত সম্পত্তি আত্মসাতের উদ্দেশ্যে বর্তমান বিবাদী আলমগীর গং এর চাচা মরহুম মীর কাশেম এই মসজিদটির প্রতিষ্ঠাতা সেজে গোপনে উক্ত ওয়াকফ এস্টেটের মোতওয়াল্লী হিসেবে নিয়োগপত্র সংগ্রহ করেন। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে ওয়াক্ফ প্রশাসক বরাবর আমাদের অভিযোগের ভিত্তিত্তে তার “মোতওয়াল্লী নিয়োগপত্র” বাতিল করা হয়। এরপর আমাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ওয়াকফ্ কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কর্তৃক এতদসংক্রান্ত সরেজমিনে তদন্তশেষে প্রেরিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ও সংশ্লিষ্ট দলিলপত্রাদি যাচাইপূর্বক হযরত শামসের আউলিয়া প্রকাশ শ্যাম আউলিয়া জামে মসজিদ (এহছান আলী আফজল মিয়া) ওয়াকফ এস্টেটের অনুমোদন দেন এবং আমাকে উক্ত এস্টেটের মোতওয়াল্লী নিয়োগ করতঃ ওয়াকফ কার্ড প্রদান করেন।

যেহেতু মরহুম এহছান আলীর ওয়াকফকৃত জমির উপর আমার পিতা কর্তৃক নির্মিত উক্ত মসজিদটির সাথে মরহুম আবদুল জব্বার এর ওয়াকফকৃত সম্পত্তির কোন প্রকার সম্পর্ক নেই বা তাদের ওয়াকফকৃত জমিতে কোন মসজিদও নেই, সেহেতু ওয়াক্‌ফ প্রশাসন বিলুপ্ত এবাদতখানাটির জন্য তাদের ওয়াকফকৃত সম্পত্তি কৃষি জমি হিসেবে রেকর্ডভূক্ত করে এবং এর দাতা মরহুম আবদুল জব্বার এর নামে পৃথক ওয়াকফ এস্টেট করে দেয়। অর্থাৎ হযরত শামসের আউলিয়া প্রকাশ শ্যাম আউলিয়া জামে মসজিদ (এহছান আলী আফজল মিয়া) ওয়াকফ এস্টেটের সাথে আবদুল জব্বার ওয়াকফ এস্টেটের কোন সম্পর্ক নেই। এরপর মীর কাশেম’র ওয়াকফ কার্ড বাতিল হওয়ায় বিবাদী পক্ষ ওয়াকফ প্রশাসক ও হযরত শামসের আউলিয়া জামে মসজিদ ওয়াকফ এস্টেটের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম জেলা জজ কোর্টে এবং এ.ডি.এম কোর্টে ২টি মামলা দায়ের করে। পরবর্তীতে উক্ত মামলাদ্বয় খারিজ হয়। এরপর উক্ত চক্রটি আবারো একই বিষয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ডিআইজি মহোদয়ের নিকট অভিযোগ দায়ের করলে তদন্তশেষে অভিযোগটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়।

আমরা অত্র এলাকার একটি ঐতিহ্যবাহী শান্তিপ্রিয় পরিবারের মানুষ। কিন্তু বিবাদী আলমগীর গং আমাদের বিরুদ্ধে ওয়াকফ প্রশাসক অফিস, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক অফিস, চট্টগ্রাম জেলা জজকোর্ট এবং এ.ডি.এম কোর্ট, চন্দনাইশ উপজেলা পরিষদ, চন্দনাইশ থানা, সাবেক দোহাজারী ইউ,পি, দোহাজারী পৌরসভায় মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলা-অভিযোগ দায়ের করে বার বার প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর এখন আরো হিংস্র হয়ে ওঠেছে এবং আমাদেরকে প্রতিনিয়ত হয়রানি, সম্মানহানি, সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার পাশাপাশি সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে আহতও করেছে। সম্প্রতি উক্ত বিবাদী চক্রটি একটি মসজিদ কমিটি গঠন করার দাবীতে আমাদের বিরুদ্ধে দোহাজারী আর্মি ক্যাম্পে অভিযোগ দাখিল করায় গত ১৪ডিসেম্বর সালিশি বৈঠকের দিন ধার্য্য হয়। কিন্তু বিবাদী পক্ষ নিজেরা অভিযোগকারী হওয়া সত্ত্বেও শেষপর্যন্ত উক্ত সালিশি বৈঠকে হাজির হয়নি।

ওয়াকফ এস্টেট একটি স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান। ওয়াকফদাতা ওয়ারিশগণই সংশ্লিষ্ট ওয়াকফ এস্টেটের সদস্য এবং উক্ত ওয়ারিশ-সদস্যগণ কর্তৃক মোতওয়াল্লী নির্বাচিত হন। নির্বাচিত মোতওয়াল্লীকে ওয়াকফ প্রশাসক কর্তৃক নিয়োগ অনুমোদন দেওয়া হয়। ওয়াক্‌ফ প্রশাসক কর্তৃক নিয়োগকৃত মোতওয়াল্লীর মাধ্যমে এস্টেট পরিচালিত হয়। তাই ওয়াকফ এস্টেটের ওয়ারিশ-সদস্য দ্বারা পরিচালিত উক্ত মসজিদ স্থানীয় কমিটি দ্বারা পরিচালিত হওয়ার কোন সুযোগ নেই।

উক্ত চিহ্নিত দুবৃত্ত চক্রটির করাল থাবা থেকে হযরত শামসের আউলিয়া প্রকাশ শ্যাম আউলিয়া জামে মসজিদ (এহছান আলী আফজল মিয়া) ওয়াক্ত এস্টেটের সম্পত্তি ও আমাদের পরিবারের সদস্যদের জান-মালের নিরাপত্তার দাবীতে আপনাদের সাহসী লেখনীর মাধ্যমে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- মো. মনছফ আলী, মো. আয়ুব আলী, আহমদ হোসেন, আলহাজ্ব আব্দুর রহমান, মাহমুদ খোরশেদ, মো. ছগির, মো. ফেরদৌস, অভি আহম্মদ, মো. গফুর, সিরাজুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম, মো. মিজান, মুদ্দাসির আলম প্রমূখ।

আরও পড়ুন