চাহিদার অর্ধেক বিদ্যুতে মিরসরাইয়ের জনজীবন অতিষ্ঠ
শতভাগ বিদ্যুতায়িত উপজেলা মিরসরাই। এই উপজেলায় প্রায় ৫ লক্ষাধিক লোকের বসবাস, রয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ২৭ হাজার বিদ্যুত গ্রাহক। এসব গ্রাহকদের ২৪ মেঘাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা থাকলেও ১২ মেঘাওয়াট বিদ্যুত সরবরাহ করা হচ্ছে, যা চাহিদার তুলনায় প্রায় অর্ধেক। গত কয়েকদিনের ভয়াবহ লোডশেডিং এবং প্রচন্ড দাপদাহে বিপর্যস্ত জনজীবন। লোডশেডিংয়ে বিপাকে পড়েছে এখানকার বাসিন্দারা, বিশেষ করে এসএসসি, দাখিল ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা। ভয়াবহ এই লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণা থেকে দ্রুত পরিত্রাণ চান শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ। প্রচন্ড দাপদাহে অসহ্য হয়ে ক্ষোভে ফুঁঁসে উঠেছে সর্বস্তরের জনগণ।
বারইয়ারহাট বাজারের ব্যবসায়ী আলিম উল্ল্যাহ রিপন বলেন, ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে ব্যবসা পরিচালনা করতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এসএসসি পরীক্ষার্থী নুর উদ্দিন বলেন, ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে পড়ার টেবিলে বসতে পারছিনা।
হিঙ্গুলী ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা জুয়েল শীল জানান, বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কারণে জন্ম নিবন্ধন সংশোধনসহ অন্যান্য যাবতীয় কাজে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
কাটাছড়া ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ইয়াকুব আলী মামুন বলেন, মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারণে ডেক্সটপের মাদারবোর্ড নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়াও ভালোভাবে কাজ করা যাচ্ছেনা, কোনকিছু এপ্রুভ দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে যার ফলে সেবা নিতে আসা লোকদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
বারইয়ারহাট আইটি সেন্টারের কম্পিউটার অপারেটর আরাফাত হোসেন সোহেল জানান, ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে অনলাইনে আবেদন করা, ফটোকপিসহ সকল প্রকার কাজে চরম দুর্ভোগ আর ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ফোরকান হোসেন বলেন, আগে ৩ মাস বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হতো কিন্তু বর্তমানে কোন কারণে ১ মাস বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। তারপরও লোডশেডিং কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায়না।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর বারইয়ারহাট জোনাল অফিসের ডিজিএম আবু জাফর আহমেদ বলেন, মিরসরাই উপজেলায় ১ লক্ষ ২৭ হাজার গ্রাহকের মধ্যে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় ১ লক্ষ ৮ হাজার ৪ শত ৬৫ জন্য গ্রাহকদের জন্য ২৪ মেঘাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা থাকলেও কর্তৃপক্ষ মাত্র ১২ মেঘাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করছেন যা চাহিদার তুলনায় প্রায় অর্ধেক এবং বর্তমানে গ্যাস স্বল্পতার কারণে এই মুহুর্তে ১৫০০-১৭০০ মেঘাওয়াট বিদ্যুৎ কম উৎপাদন হচ্ছে। ইতিমধ্যে জাতীয়ভাবে চাহিদার কথা উল্লেখ করে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর সভাপতি জাবেদ ইকবাল জানান, বর্তমানে সারা বাংলাদেশের অবস্থা একই রকম। এর মূল কারণ হচ্ছে বিদ্যুৎ চালিকা শক্তি হলো গ্যাস। সেই গ্যাস সংকটের কারণে সাময়িক লোডশেডিং হচ্ছে। অচিরেই এর সমাধান হয়ে যাবে।