হাটহাজারীর অলিতে গলিতে নোংরা পরিবেশে তৈরী হচ্ছে মোয়া

শীতের মৌসুম আসলেই বাজারে বিভিন্ন প্রকারের নাম দিয়ে চিড়া কিংবা মুড়ির মোয়া বিক্রি করতে দেখা যায়। এই মোয়াগুলো আবার ছোট থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত সবাই খেতে পছন্দ করে। আসলে আমরা প্রতিনিয়ত যে মোয়াগুলো খাচ্ছি, তা কতটা স্বাস্থ্যসম্মত আমরা কেউ জানিনা। শীতের মৌসুমকে ঘিরে হাটহাজারী উপজেলা ও পৌরসভার বিভিন্ন অলিত গলিতে বাসা বাড়িতে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে গড়ে উঠেছে এই সব বিএসটিআইয়ের অনুমোদনহীন এই অবৈধ মোয়ার কারখানা। যেখানে গিয়ে দেখা যায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে এইসব খাবার। নোংরা পরিবেশে থাকা অস্বাস্থ্যকর খেজুরের রসের সাথে মুড়ি মিশ্রনে নোংরা হাতে তৈরি হচ্ছে এইসব মোয়া।

সরজমিনে একটি কারখানায় গিয়ে দেখা যায়, একটি রুমের মধ্যে মেঝেতে পড়ে আছে মুড়ি এবং গুড়। একটি নোংরা পাতিলে তৈরি হচ্ছে এসব খাবার। এই খাদ্যগুলো তৈরি করে আবার সুন্দর করে প্যাকেট করে বিক্রি করছে স্থানীয় সব দোকানে। আবার প্যাকেটের মধ্যে দেখা যায় বিভিন্ন শিরোনাম বিভিন্ন লেখা। আবার ওই লিখাগুলোর মধ্যে একটা লিখা সবার আগে নজরে পড়ে সেটি হলো নকল হইতে সাবধান। তাহলে এইসব অবৈধ কারখানায় যদি বড় আকারে লেখা থাকে নকল হইতে সাবধান, তাহলে আসল জিনিস কোথায় বিক্রি হয় এরকম প্রশ্ন থেকে যায় সাধারণ মানুষের।

এ বিষয়ে কারখানায় থাকা শ্রমিকরা বলেন, আমরা সুন্দর পরিবেশে এগুলো তৈরি করছি। আমাদের মনে হচ্ছে এখানেই যথেষ্ট পরিমাণ পরিষ্কার রয়েছে। বিএসটিআইয়ের অনুমোদন আছে কিনা জানতে চাইলে তারা বলেন, এটি আমাদের মালিক জানেন। আমরা এ বিষয়ে কিছু জানিনা। আমরা টাকার জন্য এখানে কাজ করছি অন্য বিষয়ে আমরা অবগত নই।

এদিকে ভোক্তারা বলেন, আমরা কিভাবে বুঝব কোনটা আসল বা কোনটা নকল। তারা এমনভাবে প্যাকেটজাত করে বুঝার কোন উপায় নাই। আসলে নকল সনাক্ত করার কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু শীতকালে যখন এই খাবারগুলা বের হয়, বাসার বাচ্চাদের খাওয়ানোর জন্য নিয়ে যেতে হয়। আসলেই আমরা মোটামুটি বুঝতে পারছি এগুলো স্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে না। এগুলো মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

ভোক্তাদের দাবি, প্রশাসনের নজরদারি বাড়ালে অবৈধ ও নোংরা পরিবেশে তৈরী এসব খাবার বাজারজাত রোধ করা সম্ভব। কিন্তু প্রশাসনের এদিকে কোনো তদারকি নেই।

এ বিষয়ে মুঠোফোনে এক মোয়া কারখানার ম্যানেজার মোহাম্মদ এরশাদ বলেন, আমরা মৌসুমী ব্যবসায়ী। আমরা শুধু শীতকাল আসলে তিনমাস ব্যবসা করি। বিএসটিআই থেকে অনুমোদন নিতে হয় সেটি আমরা জানি না। কিন্তু আমরা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন জায়গায় মোয়া তৈরি করছি।

এ বিষয়ে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবিএম মশিউজ্জামান বলেন, আমি এ বিষয়ে এখনো কিছু জানিনা। আমি খবর নিয়ে বিএসটিআইয়ের সাথে যোগাযোগ করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসটিআই এর উপ-পরিচালক (মেট) ও অফিস প্রধান মোঃ মাজাহারুল হক বলেন, পণ্যটি তাদের আওতাভুক্ত না হওয়ায় চক্রটি সুযোগ নিয়েছে। তবে বিপণনের ক্ষেত্রে তারা যে স্টিকার ব্যবহার করছে তার অনুমোদন নিতে হবে বিএসটিআই থেকে।

আরও পড়ুন