মিরসরাই ট্র্যাজেডির ১ যুগ: ফুলেল শ্রদ্ধায় শিক্ষার্থীদের স্মরণ

ফুলেল শ্রদ্ধায় মিরসরাই ট্র্যাজেডিতে নিহতদের স্মরণ করলো শিক্ষার্থী, স্বজন, শিক্ষক, রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। মঙ্গলবার (১১ জুলাই) সকালে দুর্ঘটনাস্থলে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভ ‘অন্তিম’ ও আবুতোরাব বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের মূল ফটকে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভ ‘আবেগ’ এ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এসময় নিহত শিক্ষার্থীদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সকালে স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা জানান গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি, মিরসরাই উপজেলা পরিষদ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা আওয়ামী লীগ, আবুতোরাব বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শ্রমিক লীগ, মায়ানী ইউনিয়ন পরিষদ, মঘাদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা যুবলীগ, মায়ানী ইউনিয়ন ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।

মিরসরাই ট্র্যাজেডিতে নিহত শিক্ষার্থীদের স্মরণে আবুতোরাব বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের উদ্যোগে শোকসভার আয়োজন করা হয়। মায়ানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির আহমদ নিজামীর সঞ্চালনায় ও বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষরেদ সভাপতি আবুল হোসেন বাবুলের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মর্জিনা আক্তার।

এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মিজানুর রহমান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এম আলা উদ্দিন, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ফেরদৌস হোসেন আরিফ, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির খান, মিরসরাই পৌরসভার মেয়র গিয়াস উদ্দিন, জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম মাস্টার, মঘাদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসাইন মাস্টার, সাহেরখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল হায়দার চৌধুরী, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মাইনুর ইসলাম রানা, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য ওমর ফারুক, মায়ানী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি নুরের ছাপা নয়ন প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি বলেন, ‘মিরসরাই ট্র্যাজেডি স্মরণকালের ভয়াবহ একটি দুর্ঘটনা। এইদিন পিকআপ উল্টে ৪২ জন শিক্ষার্থীসহ ৪৫ জনের মৃত্যু হয়। যারা জীবিত থাকলে পরিবার, দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করতো। আমি তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। ট্র্যাজেডিতে সবচেয়ে বেশী শিক্ষার্থী নিহত হওয়া আবুতোরাব বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে শ্রেণী কক্ষ, আসবাবপত্রসহ যে সকল সংকট আছে তা নিরসন করা হবে।’

প্রসঙ্গত : ২০১১ সালের ১১ জুলাই মিরসরাই স্টেডিয়াম থেকে বঙ্গবন্ধু-বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবল ফাইনাল খেলা শেষে ফেরার সময় শিক্ষার্থীদের বহনকারী একটি পিকআপ বড়তাকিয়া-আবুতোরাব সড়কের সৈদালী এলাকায় পাশের একটি ডোবায় উল্টে যায়। যেখানে উপজেলার আবুতোরাব উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩৪ জন, আবুতোরাব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪ জন, আবুতোরাব ফাজিল মাদ্রাসার ২ জন, প্রফেসর কামাল উদ্দিন চৌধুরী কলেজের ২ জন শিক্ষার্থী নিহত হন। এছাড়া এক অভিভাবক, ২ জন ফুটবলপ্রেমী যুবকসহ ৪৫ জনের মৃত্যুর মধ্যদিয়ে রচিত হয় মিরসরাই ট্র্যাজেডি। নিহত শিক্ষার্থীদের স্মরণে সবচেয়ে বেশী শিক্ষার্থী নিহত হওয়া আবুতোরাব বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের মূল ফটকে নির্মাণ করা হয় স্মৃতিস্তম্ভ ‘আবেগ’ আর দুর্ঘটনাস্থলে নির্মাণ করা হয় স্মৃতিস্তম্ভ ‘অন্তিম’।

আরও পড়ুন