দিনে দুপুরে বীরদর্পে ছিনতাই করে চাকমা রুবেল গ্রুপ
চট্টগ্রাম নগরীর যাত্রীবাহী বাসে এবং সড়কে ১২-১৪জনের দল নিয়ে ছিনতাই করে বীরদর্পে পুলিশের নাকের ডগায় ঘুরে বেড়ায় চাকমা রুবেল গ্রæপ। পুলিশ তাদেরকে ধরে না, ছোঁয় না বলে ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি। দলবদ্ধ ছিনতাইকারী এ গ্রুপটির দলনেতা রুবেল প্রকাশ চাকমা রুবেল (৩২)। সে নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুর গ্রামের মৃত আবদুল মালেকের ছেলে।
ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ ছিনতাইকারী দলের সদস্যরা দলবেঁধে গণপরিবহনে ওঠে। সেখানে কখনও কখনও মানুষের পকেট কেটে টাকা পয়সা নিয়ে যায় আবার কখনও কখনও মোবাইল, মানিব্যাগ, ভ্যানিটি ব্যাগ কেড়ে নিয়ে নেয়। কেউ প্রতিবাদ করতে চাইলে দলের সবাই মিলে তাকে মারধর করে, হেনস্তা করে। মূলত নিউমার্কেট, রেলস্টেশন, আমতল, টাইগারপাস এলাকায় তারা ছিনতাই করে থাকে। এর বাইরেও শহরের নানা প্রান্ত ইপিজেড, আগ্রাবাদ, দু’নম্বর গেট, জিইসি, চকবাজারসহ আরও অনেক জায়গায় তারা ছিনতাই করে থাকে। মাঝে মধ্যে শহরের বাইরে গিয়েও তাদেরকে ছিনতাই করতে দেখা যায় বলে নগরবাসীর অভিমত।
নিউ মার্কেট কোতোয়ালী সড়কে প্রতিদিন যাতায়াতকারী কর্ণফুলী উপজেলার সরকারী এক প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা জানান, তার চোখের সামনেই বাসে ওঠে ৭-৮জনের একটি ছিনতাইকারী দল বেশ কয়েকজনের মোবাইল ও মানিব্যাগ, ভ্যানিটি ব্যাগ নিয়ে বীরদর্পে নেমে গেছেন। বাসের হেলপার প্রথমে তাদের গাড়ীতে তুলতে না চাইলে আমতলের মোড়ে তারা জোর করেই গাড়ীতে ওঠে। তারপর কাজ সেরে নেমে পড়ে।
আরেক স্কুল শিক্ষিকা আইরিন আক্তার বলেন, কোতোয়ালীর মোড় থেকে বাসে ওঠেছি আগ্রাবাদ যাবো বলে। হঠাৎ একটা জরুরী ফোন আসায় ধরতে যাবো এমন সময় ছোঁ মেরে আমার মোবাইলটি নিয়ে পালিয়ে যায় এক ছিনতাইকারী। পুলিশের সামনেই এ ঘটনা ঘটেছে। আমি গাড়ী থেকে নেমে পুলিশকে জানালে তারা নির্বিকার ছিলো, আমাকে কোনো রকম সহযোগিতা করেনি। পরে কোতোয়ালী থানায় জিডি করে তিনমাস পর মোবাইল ফেরত পেয়েছি।
কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (ওসি) জাহেদুল কবির জানান, গত ফেব্রুয়ারীতে পুরাতন রেল স্টেশন এলাকা থেকে চাকমা রুবেলসহ সাতজনকেই গ্রেপ্তার করেছিলাম। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। দলনেতা চাকমা রুবেলের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে ১৫টি। বাকি ছয়জনের মধ্যে আল আমিনের দুটি, রমজান হোসেন রুবেলের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনসহ আটটি, শাহাদাৎ হোসেন বাবুর তিনটি, বাদশার একটি, দ্বীন ইসলাম প্রকাশ মুন্নার বিরুদ্ধে দুটি এবং মনিরুল হোসেনের বিরুদ্ধে চারটি মামলা রয়েছে। তারা জামিনে বেরিয়ে আবারও ছিনতাইয়ে নেমে পড়েছে। তাদেরকে গ্রেপ্তারে আমরা কাজ করছি।
জানতে চাইলে নগর পুলিশের উত্তর জোনের উপ-কমিশনার মোখলেসুর রহমান জানান, কয়দিন আগেও ছিনতাইয়ের অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ছিনতাইকারিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে।
এদিকে ছিনতাইকারী রুবেল গ্রæপের রুবেলসহ কয়েকজনের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভুক্তভোগীরা তাদের কাছ থেকে সাবধান থাকার আহবান জানিয়েছে। পাশাপাশি নিউমার্কেট এলাকার গণপরিবহনে চলাচলকারী কম বেশি সবাই তাদেরকে চিনলেও পুলিশ চিনে না বলে আক্ষেপ করতে দেখা গেছে। তাদের দাবি পুলিশ চিনলে এভাবে দিনে দুপুরে বীরদর্পে ছিনতাই করে কিভাবে।