চুয়েটে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস পালিত
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)-এর ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, “আমরা বাঙালিরা বীরের জাতি। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে গর্ব করার মতো স্বাধীনতা পেয়েছি। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়াই একজন ডায়নামিক নেতার গুণ। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণ, ৬দফার প্রস্তাবনা, ৭ই মার্চে স্বাধীনতার ঘোষণা না দেওয়া, ২৫শে মার্চ রাতে গ্রেফতারের পূর্বে স্বাধীনতার ঘোষণা ইত্যাদি সিদ্ধান্ত ছিল একজন ভিশনারী লিডার হিসেবে বঙ্গবন্ধুর অনন্য দৃষ্টান্ত। তাঁর শাসনামলেও মাত্র ৪ বছরের মেয়াদে তিনি অনেক দূরদর্শী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, যা আজও প্রাসঙ্গিক। বিশ্বে এমন নেতৃত্ব সত্যিই বিরল। তাঁরই সুযোগ কন্যা দেশরতœ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার মিশনে আমাদের একাত্মতা প্রকাশ করতে হবে। চলুন আমরা দেশকে ভালোবাসি, দেশের মানুষকে ভালোবাসি এবং দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করি।”
তিনি রবিবার (২৬ মার্চ) সকালে চুয়েট প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ঐতিহাসিক নেতৃত্ব এবং দেশের উন্নয়ন” শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে মহান স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সুনীল ধর, পুরকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মইনুল ইসলাম, তড়িৎ ও কম্পিউটার কৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মশিউল হক, স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল হাছান। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতীয় দিবস উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব, যন্ত্রকৌশল অনুষদের ডিন ও রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিভাগীয় প্রধানগণের পক্ষে স্থাপত্য বিভাগের বিভাগীয় প্রধান কানু কুমার দাশ, প্রভোস্টগণের পক্ষে শহিদ তারেক হুদা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. সানাউল রাব্বী, স্টাফ ওয়েলফেয়ার কমিটির সভাপতি ও চুয়েট বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. জামাল উদ্দীন আহাম্মদ, চুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. বশির জিসান, অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রকৌশলী সৈয়দ মোহাম্মদ ইকরাম, স্টাফ এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. জামাল উদ্দিন।
দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা সঞ্চালনা করেন মানবিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাহিদা সুলতানা ও উপ-পরিচালক (তথ্য ও প্রকাশনা) মোহাম্মদ ফজলুর রহমান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বঙ্গবন্ধু, তাঁর পরিবার ও বীর শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন চুয়েট কেন্দ্রীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা ক্বারী নুরুল্লাহ। পরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার উপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করেন উপ-পরিচালক (তথ্য ও প্রকাশনা) মোহাম্মদ ফজলুর রহমান।
এর আগে সকাল সাড়ে ৮টায় চুয়েট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের পাদদেশে সুসজ্জিত আনসার বাহিনীর কুচকাওয়াজের মাধ্যমে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন-সহকারে জাতীয় পতাকা উত্তোনের মাধ্যমে দিনব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন করেন চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম।
পরে শহিদ মিনারে উপাচার্য মহোদয় পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির সাথে ছিলেন। এরপর ডিনবৃন্দ, ইনস্টিটিউট পরিচালকগণ, বিভাগীয় প্রধানগণ ও সেন্টার চেয়ারম্যানগণ, ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ও হল প্রভোস্টগণ, শিক্ষক সমিতি, অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন, স্টাফ অ্যাসোসিয়েশন, বঙ্গবন্ধু পরিষদ এবং বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
পরে চুয়েট ক্যাম্পাসে অবস্থিত বীর শহিদদের কবর জেয়ারত ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
দিনব্যাপী অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল- চুয়েটের ছাত্রছাত্রী ও ক্যাম্পাসের শিশুকিশোরদের জন্য পৃথক রচনা প্রতিযোগিতা, কবিতা আবৃত্তি, উপস্থিত বক্তৃতা, জয়ধ্বনি’র পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং বাদ আছর কেন্দ্রীয় মসজিদে বীর শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া মাহফিল।