চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)-এর ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলা গড়া। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরে এসে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেই স্বপ্ন পূরণের পথে আমরা দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছি। দেশের এই উন্নয়ন-অগ্রযাত্রায় সবচেয়ে বেশি প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখার সুযোগ আমাদের প্রকৌশলী সমাজের। ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির লক্ষ্যে চুয়েট নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে। ভবিষ্যতেও প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের রূপরেখা বাস্তবায়নে আরও বেশি ভূমিকা রাখব- সেই প্রত্যাশা করছি। স্বাধীনতা পরবর্তী ৫৩ বছরের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে আমরা দেখতে পাই, দীর্ঘ সময় ধরে স্বাধীনতা-বিরোধী ও বিভিন্ন প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী দেশের ক্ষমতায় ছিলেন। তাদের ইতিহাস বিকৃতির মাধ্যমে স্বাধীনতার ইতিহাস ও চেতনা ভুলতে বসেছিলাম। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেটা আবারও পুনরুদ্ধার হয়েছে। একটি আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে নিজেদের স্বার্থেই আমাদের এই ধারা অব্যাহত রাখবে হবে।”
মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল কক্ষে আয়োজিত মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এঁর ঐতিহাসিক নেতৃত্ব এবং দেশের উন্নয়ন” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. জামাল উদ্দীন আহাম্মদ, সিভিল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সুদীপ কুমার পাল, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সামসুল আরেফিন, বিজ্ঞান ও প্রযুুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এ.এইচ. রাশেদুল হোসেন, স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ রাশিদুল হাসান। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মেকানিক্যাল অ্যান্ড ম্যানুফেকচারিং ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন ও রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির। ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিভাগীয় প্রধানগণের পক্ষে পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. সানাউল রাব্বী, প্রভোস্টগণের পক্ষে শামসেন নাহার খান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. রাজিয়া সুলতানা, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. জি.এম. সাদিকুল ইসলাম, কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি প্রকৌশলী সৈয়দ মোহাম্মদ ইকরাম, কর্মচারী সমিতির পক্ষে মো. আব্দুল আল হান্নান।
দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা সঞ্চালনা করেন উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মোহাম্মদ ফজলুর রহমান ও উপাচার্য কার্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার (সমন্বয়) মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম।
আলোচনা সভার শুরুতে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা ক্বারী নুরুল্লাহ। পরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার উপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
এর আগে সকাল ১০.০০ ঘটিকায় চুয়েট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে সুসজ্জিত আনসার বাহিনীর কুচকাওয়াজের মাধ্যমে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন-সহকারে জাতীয় পতাকা উত্তোনের মাধ্যমে দিনব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন করেন ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম।
পরে শহীদ মিনারে উপাচার্য মহোদয় পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. জামাল উদ্দীন আহাম্মদ, রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির সাথে ছিলেন। এরপর বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দ, ইনস্টিটিউট পরিচালকগণ, বিভাগীয় প্রধানগণ ও অন্যান্য পরিচালকবৃন্দ, অফিস প্রধানগণ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ও হল প্রভোস্টগণ, শিক্ষক সমিতি, কর্মকতা সমিতি, কর্মচারী সমিতি, চুয়েট ক্লাব ও কর্মচারী ক্লাবের থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে চুয়েট ক্যাম্পাসে অবস্থিত বীর শহীদদের কবর জেয়ারত ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
দিনব্যাপী অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল- চুয়েটের ছাত্রছাত্রী ও ক্যাম্পাসের শিশুকিশোরদের জন্য রচনা প্রতিযোগিতা, কবিতা আবৃত্তি, উপস্থিত বক্তৃতা, বাদ জোহর কেন্দ্রীয় মসজিদে বীর শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া মাহফিল প্রভৃতি।