চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে নিয়োগ পরীক্ষা
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজে নিয়োগ বাণিজ্যের সাথে সংশ্লিষ্ট সিন্ডিকেটের বদৌলতে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ২৩ চাকরী প্রার্থী মৌখিক পরীক্ষা দিতে এসে ধরা খেয়েছেন। আটক ২৩জনকে থানায় হস্তান্তর করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে ৫ জন এবং মঙ্গলবার ১৮ জনকে চট্টগ্রাম পাহাড়তলী থানায় হস্তান্তর করার পাশাপাশি দুটি পৃথক মামলাও দায়ের করা হয়েছে। পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) রোজিনা খাতুন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। মামলায় ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২৩ জনকে আসামি করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
কাস্টম সূত্রে জানা গেছে, ৯৮ জন সিপাহী পদে ৩ হাজার ৩৪৪ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করেছিল। এরমধ্যে গত ২২ ডিসেম্বর লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৩৫০ জন প্রার্থী গত সোমবার, মঙ্গলবার ও আজ বুধবার মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেয়। লিখিত পরীক্ষায় জালিয়াতির বিষয় মৌখিক পরীক্ষার সময় ধরা পড়ায় ২৩ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানান নিয়োগ পরীক্ষায় সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, এর আগে গত ২৩ ডিসেম্বর জালিয়াতির মাধ্যমে লিখিত পরীক্ষা দিতে আসা ৭ জনকে আটক করে চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছিল। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে আটককৃত ১৮ জন প্রার্থীর মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার সময় তাদের হাতের লেখা গড়মিল পরিলক্ষিত হয়। একইসঙ্গে লিখিত পরীক্ষার খাতার লেখা কোন প্রশ্নের জবাবও দিতে পারেননি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে ১০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে কৌশলে লিখিত পরীক্ষায় অন্যকে দিয়ে পরীক্ষা দিয়েছিলেন।
কাস্টমস সূত্রে জানা যায়“ ২০১৪ এবং ২০১৭ সালে দুটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিলো প্রতিষ্ঠানটি। এরপর বিভিন্ন জটিলতার কারণে নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। এখন ২০১৪ সালের নিয়োগের পরীক্ষা চলমান রয়েছে।
নিয়োগ পরীক্ষায় প্রতারণা করায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) এর একাধিক থানায় কাস্টমস এর পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ২৭ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) নগরীর পাহাড়তলী থানায় ১৮জনের নাম উল্লেখ্য করে এবং অজ্ঞাত আরো ১৮জনকে আসামী করে প্রতারনার মামলা করেছেন চট্টগ্রাম কাস্টম এর সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা (আইডি নং- ৪৯২) বুলবুল আহমেদ চৌধুরী (৩৬)। এর আগে সিএমপি’র খুলশী থানায় একই অভিযোগে ২৩ডিসেম্বর ৭জনকে গ্রেপ্তার ও একাধিক ব্যক্তিকে অজ্ঞাত রেখে মামলা হয়েছে। এই অনিয়ম ও প্রতারণার খবর ছড়িয়ে পড়ায় নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
চাকুরী প্রত্যাশী একাধিক পরীক্ষার্থী জানায় “সিপাহি পদে লিখিত পরীক্ষায় ৯৮টি আসনে পরীক্ষা দিয়েছে ৩,৩৪৪জন। যার মধ্যে ৩৫০জন মৌখিক পরীক্ষায় সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু মৌখিক পরীক্ষায় এসে এখন একের পর এক প্রতারণা করে লিখিত পরীক্ষা পাস হওয়া ব্যক্তিদের দেখা যাচ্ছে। এত বড় অনিয়ম কিভাবে হলো, নিয়োগ পরীক্ষায় যাদের দায়িত্ব ছিলো তারাও এটার সাথে জড়িত রয়েছে বলে আমরা মনে করছি। এই নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করা হোক। আমরা যারা মেধাবী রয়েছি আমরা এই নিয়োগ পরীক্ষা বাতিলের জন্য হাইকোর্টে রিট করব।
এই বিষয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি।