চট্টগ্রামের পাহাড়তলী রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়মবর্হিভুতভাবে ৮ বছরের জুনিয়র এক শিক্ষককে প্রধান শিক্ষক পদে পদায়নের ঘটনায় স্কুলে অন্যান্য শিক্ষকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুনীল চন্দ্র শীল গত ৩ মে অবসরে যাওয়ার পর কোনো ধরনের নিয়মনীতি না মেনে সিনিয়র ৬ জন শিক্ষককে ডিঙ্গিয়ে জুনিয়র গ্রেডের সহকারী শিক্ষক রেবেকা সুলতানাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। যাকে প্রধান শিক্ষকের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয়েছে রেলওয়ের ওয়েব সাইটে প্রকাশিত তালিকায় তার অবস্থান ৪১ তম। অথচ ৬ষ্ঠ তম থেকে পরবর্তী শিক্ষকদের ডিঙ্গিয়ে তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
স্কুলের সহকারী শিক্ষক মো. রোকনুজ্জামান এবং খালেদা আক্তার বলেন, পাহাড়তলী সরকারি রেলওয়ে স্কুলে আমরা ৬ জন সিনিয়র সহকারী শিক্ষক কর্মরত আছি। আমরা ২০০৫ সালে সরাসরি প্রক্রিয়ার নিয়োগকৃত সহকারী শিক্ষক। ২০২৪ সালে ২৫ জানুয়ারি বাংলাদেশ রেলওয়ে ওয়েব সাইটে প্রকাশিত রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় সমূহে কর্মরত সহকারী শিক্ষকদের জ্যেষ্ঠতার তালিকায় রেবেকা সুলতানার অবস্থান ৪১তম। আমরা ৬ জন সিনিয়র শিক্ষককে বাদ দিয়ে ৮ বছরের জুনিয়র একজনকে শিক্ষককে প্রধান শিক্ষক পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রদান বিদ্যালয় সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার অন্তরায় বলে মনে করি।
পাহাড়তলী রেলওয়ের সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ মে স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুনীল চন্দ্র শীল অবসরে গেলে ৩ জুলাই রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সিনিয়র ওয়েলফেয়ার অফিসার স্বপন কান্তি মজুমদার এক পত্রাদেশে স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা রেবেকা সুলতানাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেন।
এই ব্যাপারে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সিনিয়র ওয়েলফেয়ার অফিসার স্বপন কান্তি মজুমদার বলেন, স্কুলের প্রধান শিক্ষক অবসরে যাওয়ার পর একজনকেতো ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দিতে হবে, স্কুল চালানোর জন্য। নতুন করে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ না দেয়া পর্যন্ত উনাকে (রেবেকা সুলতানা) দায়িত্ব দেয়া হয়েছে স্কুল চালানোর জন্য। আর রেবেকা সুলতানা যার কথা বলা হচ্ছে-উনি বর্তমানে সহকারী প্রধান শিক্ষক। সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে উনিইতো দায়িত্ব পাবেন। আগে জ্যেষ্ঠতার যে তালিকাটা হয়েছে-সেখানে ভুল করা হয়েছিল। এখন এটা সংশোধন করা হচ্ছে। এটা সংশোধন না করা পর্যন্ত তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
এই ব্যাপারে পাহাড়তলী রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রেবেকা সুলতানা বলেন, আমি ২০২২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে গত আড়াই বছর ধরে স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। প্রধান শিক্ষকের অবর্তমানে সহকারী প্রধান শিক্ষকইতো ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করবেন-এটাই তো স্বাভাবিক। আমি ২০১৩ সালে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছি। আমার নিয়োগের বিষয়টি রেলওয়ের ডিজি স্যার কর্তৃক অনুমোদিত এবং মাউশি কর্তৃক অনুমোদিত। রুলস আছে বলেই তো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। স্কুলের অনেকেই আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দিয়ে ষড়যন্ত্র করছেন। আমি তো তাদের মতো আর দপ্তরে দপ্তরে গিয়ে তদ্বির করতে পারছিনা। আমার এই দায়িত্বগ্রহণ কর্তৃপক্ষ দেখে শুনেই দিয়েছেন।