বিএনপি’র রোডমার্চকে ঘিরে ব্যানার ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে নগরীর রাজপথ

একদফার দাবিতে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে দেশব্যাপী তারুণ্যের রোডমার্চ বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) বিকালে চট্টগ্রামে এসে পৌঁছবে। কুমিল্লা থেকে শুরু হওয়া রোডমার্চ ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক হয়ে চট্টগ্রামের সিটি গেট, একে খান মোড়, আকবর শাহ, ফয়স লেক, জিইসি মোড় হয়ে কাজির দেউড়ীর নুর আহম্মদ সড়কের সমাবেশে যোগ দেবে। বিকাল ৩টায় কাজীর দেউড়ী বিএনপি অফিসের সামনের সড়কে অনুষ্ঠিতব্য সমাবেশ থেকে নতুন কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে বলে দলের বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে।

রোডমার্চকে ঘিরে ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম নগরী ও আশেপাশের এলাকা ব্যানার ফেসটুন পোস্টারে ছয়ে গেছে। ‍উজ্জীবিত বিএনপি’র নেতকর্মীদের মধ্য সাজ সাজ রব লক্ষ্য করা গেছে। নগরীর পার্শ্ববর্তী উপজেলা সীতাকুন্ড থেকে সিটিগেইট, একে খান মোড়, আকবর শাহ, ফয়স লেক, জিইসি মোড়, ওয়াসা মোড় হয়ে কাজির দেউড়ীর নুর আহম্মদ সড়ক পর্যন্ত ব্যানার পোস্টারে যেনো প্রাণ চাঞ্চল্যের জানান দিচ্ছে বিএনপি’র জনসম্পৃক্ততার কথা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গত তিন চারদিন ধরে নগরীর নাসিমন ভবন, কাজীর দেউড়ী ও আশেপাশের এলাকায় রাত ২টা তিনটা পর্যন্ত নেতাকর্মীদের আনোগোনায় মুখরিত থাকে। উৎসবমুখর পরিবেশ চলে আড্ডা, পরিকল্পনা নিজেদের মধ্যে নানা শলা- পরামর্শ। কেউ কেউ ব্যানার ফেস্টুন লাগানোর জন্য জায়গা দখল করে সেখানে ফ্রেম করে রাখছেন।

বুধবার রাত ৮টার দিকে নগরীর কাজীর দেউড়ী মোড়ে কথা হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক নেতা ও বর্তমান নগর যুবদলের সহ-দপ্তর সম্পাদক শাহেদুল ইসলামের সাথে। তিনি জানান, মূলত এটা তারুণ্যের রোডমার্চ হলেও এখানে নানা শ্রেণি পেশার মানুষ অংশ নিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে তাদের অনাস্থা জানাবে। লোকে লোকারণ্য হবে বৃহস্পতিবারের রোডমার্চের সমাবেশ। নগর যুবদলের সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।

নগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক মোশারফ হোসেন বলেন, প্রিয় নেতা কারাবন্দী আসলাম চৌধুরীর মুক্তির জোরালো দাবি উত্থাপিত হবে আবারও কালকের সমাবেশ থেকে। বীর চট্টলার রাজপথ আসলাম চৌধুরীর সাহসী নেতৃত্বকে মিস করে। সেই সাথে যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মুন্না ভাইসহ সকল রাজবন্দীর মুক্তির মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন আরও বেগবান হবে ইনশাল্লাহ।

কুমিল্লা থেকে শুরু হওয়া এ রোডমার্চে মোট চারটি জনসভা হবে। সকাল ১০টায় প্রথম সভাটি হবে কুমিল্লায়। এই সভা শেষে রোডমার্চ রওনা হবে ফেনীর পথে। ফেনীর মহিপালে হবে দ্বিতীয় জনসভা। তৃতীয়টি হবে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলা সদরে। এরপর চট্টগ্রাম নগর বিএনপি’র কার্যালয় নাসিমন ভবন সংলগ্ন কাজীর দেউড়ি মোড়ে সমাবেশের মাধ্যমে এই কর্মসূচি শেষ হবে।
রোডমার্চকে ঘিরে উজ্জীবিত এখানকার নেতাকর্মীরা। এখান থেকে কঠোর কর্মসূচি দিতে পারে দলের হাইকমান্ড। শুধু দলীয় নেতাকর্মী নয়, ব্যাপক সংখ্যক সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে চলছে নানা প্রস্তুতি সভা ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচী। এরমধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগের ১১টি সাংগঠনিক জেলায় প্রস্তুতি সভা করা হয়েছে। নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সর্বোচ্চ উপস্থিতি নিশ্চিত করতে দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন ইউনিটকেও সাংগঠনিক চিঠি ও মৌখিক নির্দেশনা পৌঁছে দেয়া হয়েছে। থানা, ইউনিয়ন পর্যায়েও প্রস্তুতি সভা করা হচ্ছে। প্রোগ্রামে উপস্থিত থাকতে সাধারণ মানুষের কাছে লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। এরমধ্যে করা হয়েছে কয়েকটি সমন্বয় কমিটি।

সূত্রমতে, সরকারের শেষ পর্যায়ে এসে বড় এই কর্মসূচিকে ঘিরে দারুণভাবে উজ্জীবিত বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা। প্রস্তুতি সভা, সমন্বয় সভা, প্রচারপত্র বিলিতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নিচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও চালানো হচ্ছে প্রচারণা। এরমধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দলীয় কার্যক্রমে নিষ্ক্রিয় নেতাকর্মীদের অনেককেও এই প্রচারণায় দেখা যাচ্ছে।

রোডমার্চকে ঘিরে চট্টগ্রাম নগরীতে সমাবেশের প্রস্তুতি সম্পর্কে নগর বিএনপি’র আহবায়ক ডাঃ শাহাদাত হোসেন বলেন, আমাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন। আজ কাজীর দেউড়ী মোড় জনসমুদ্রে রূপ নিবে ইনশাল্লাহ। দলের মহাসচিবসহ কেন্দ্রীয় নেতারা সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন। সমাবেশ হবে শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খল। বিএনপি গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিশআসী গণমানুষের দল।

আরও পড়ুন