ধর্ষণ প্রাণনাশের হুমকির প্রতিবাদে লামায় অসহায় পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

বান্দরবানের লামার বমুবিলছড়ি ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড মেম্বার মিজানের বর্গাচাষী কর্তৃক অসহায় এক পরিবারের নারীকে ধর্ষণ ও প্রাণনাশের হুমকির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে মনোয়ারা নামের এক নারী।

শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে লামা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে চকরিয়া উপজেলা বমুবিলছড়ি ইউনিয়ন ৫ নং ওয়ার্ড পানিশ্যাবিল নারকাটাঝিরিমুখের বাসিন্দা মনোয়ারা বেগম বলেন, “মেম্বার মিজানের ইন্ধনে তার বর্গা চাষি আরেক মিজান কর্তৃক তার কলেজ পড়ুয়া মেয়েকে ধর্ষনের হুমকি দিচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘ আমরা বমুবিলছড়ি সংরক্ষিত সরকারি ফরেষ্ট ভূমিতে অংশিদার (ভূমহীন) দরিদ্র প্রজা হই। আমার স্বামী একজন মেরুদণ্ড ক্ষতজনিত রোগাক্রান্ত ব্যক্তি। বমুবিলছড়ি ইউনিয়নের পানিশ্যাবিল সরকারি রিজার্ভ ভূমির টিলায় আমরা সামাজিক বনায়নের অংশীদার হিসেবে বসবাস করি। সরকারি বাগান দেখা শুনা ও পরিচর্চা করে এবং সেখানে সংরক্ষিত ভূমির পতিত জমিতে চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করি। বিগত দিনে আমার স্বামীর চিকিৎসা ব্যয় মেটানোর জন্য আমাদের ভোগদখলীয় কিছু জমি দুবাই প্রবাসী নুর হোছাইন নামের একজনকে বন্ধক প্রদান করি। শর্তানুযায়ী কিছুদিন আগে আমরা সেই বন্ধকি জমি ছাড়াতে গেলে নুর হোছাইন আমাদের জমি ফেরৎ দিতে রাজি হচ্ছেন না। আমরা জানতে পেরেছি যে, নুর হোছাইন উক্ত জমি তার শ্যালক ৫নং ওয়ার্ড মেম্বার মিজানকে ৩০ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিজান মেম্বার বিভিন্ন সময় নানান ধরণের হুমকি দিয়ে আসছে।

মিজান মেম্বারের লেলিয়ে দেয়া তার বর্গা চাষি মিজান, পিতাঃ মোহাম্মদ আলী  আমার কলেজ পড়ুয়া মেয়েকে ধর্ষণ ও প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। ১ সেপ্টেম্বর আমাদের পরিবারে সাথে সরকারি বুমরিজার্ভ ভূমি সংক্রান্ত চলমান বিরোধ ও চাষি মিজান কর্তৃক লাঞ্ছিত হওয়ার বিষয়ে লামা জেলা পরিষদ গেষ্ট হাউসে একটি বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে হাজির হওয়ার জন্য সকাল থেকে আমরা সবাই লামা বাজারে যাই। দুপুরের দিকে আমার মেয়েকে বাড়ি চলে যেতে বলি। মেয়ে বাড়ি ফেরার পথে লামা পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ড গজালিয়া জীফ স্টেশনে পৌঁছলে মিজান মেম্বারের ঈশারায় তার বর্গা চাষি মিজান তার গতিরোধ করে বলতে থাকে’ আমার বিরুদ্ধে লামা পৌর মেয়রের কাছে বিচার দিছস, এর আগে ধর্ষণ করি নাই, এবার তোকে ধর্ষণ করে জেলে যাবো’। এ সময় খুব ভয় পেয়ে মেয়ে আমাকে মোবাইলে জানায়। আমি নিজেও ভয় পেয়ে যাই তাই তাৎক্ষনিক বিষয়টা কাউকে জানাইনি। ওই হুমকির পর আমার মেয়ে তড়িগড়ি করে একটি অটোরিকশা নিয়ে ঘরে চলে যায় এবং সারাদিন ঘরের দরজা বন্ধ করে বসে থাকে। এরপর লামা বাজার গেস্ট হাউসে বৈঠক শেষে রাতে হাফেজিয়া পাড়ায় ৫নং ওয়ার্ড পানিশ্যাবিল দোকানে বসে সেখানে আইয়ুবের দোকানের পাশে দাঁড়িয়ে আমার মেয়েকে উদ্দেশ্য করে চাষি মিজান আবারো একই ভাষায় হুমকি দেয়।

এই অবস্থায় আমরা আপনাদের মাধ্যমে দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমরা এ সব অন্যায় ও নির্যাতনের প্রতিবাদে আইনের আশ্রয় নিব”।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মনোয়ারা বেগমের ছেলে বমুবিলছড়ি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মোঃ আরাফাত।

এ সময় বমুবিলছড়ি ইউনিয়নের সাবেক বর্তমান কয়েকজন মেম্বার, গন্যমান্য ব্যক্তি ও লামা প্রেস ক্লাবের সভাপতি প্রিয়দর্শী বড়ুয়া, সিনিয়র সাংবাদিক মুহাম্মদ কামালুদ্দিন, লামা মফস্বল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামসহ অন্যান্য সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন