বৃষ্টির জল যেনো বাড়িয়েছে মনোবল

মূষলধারে বৃষ্টি থামাতে পারেনি নেতাকর্মীদের উচ্ছাস আর ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ। প্রচন্ড বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে চট্টগ্রাম নগরীর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে শুরু করে সীতাকুন্ডের দারোগাহাট পর্যন্ত বিস্তীর্ণ জনপদজুড়ে গগনবিদারী শ্লোগান আর মুর্হুমুহু তালি যেনো জানিয়ে দিচ্ছিলো অকৃত্রিম ভালবাসা আবেগের কাছে সবই তুচ্ছ। এমন বাদলদিনে সকাল ৯টার মধ্যেই লোকে লোকারণ্য হয়ে যায় নগরীর কারাফটক এলাকা। সবার প্রতীক্ষা কখন বের হবেন প্রিয় নেতা বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদ্য সাবেক যুগ্ম মহাসচিব, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা লায়ন মো: আসলাম চৌধুরী এফসিএ। সীতাকুন্ড তথা চট্টগ্রামের মানুষের হৃদয়ে তাঁর যে অবস্থান তা আবারও প্রমাণিত হলো দীর্ঘ ৮ বছর ৩ মাস ৪ দিন পর কারামুক্তির মাহেদ্রক্ষণে।

বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারে আমলে বিএনপি তথা বিরোধী দলের হেভিওয়েট অনেক নেতা জেল খেটে বের হয়েছেন কিন্তু কাউকে এমন বীরোচিত সংবর্ধণা দিয়েছে নেতাকর্মীরা তেমনটি দেখা যায়নি। শত শত মোটরবাইক, প্রাইভেট কার, মাইক্রো বাস, ট্রাক নানা রঙে বর্ণে সজ্জিত হয়ে ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড, ব্যান্ডদল নিয়ে উত্তাল শ্লোগানে মুখরিত রাজপথ যেনো কেবল আসলাম চৌধুরীকেই বরণে প্রস্তুত ছিলো। এখানে বৃষ্টির বাগড়া কিছুটা ব্যাঘাত ঘটালেও দমাতে পারেনি নেতাকর্মীদের ভালবাসা, আবেগ, উচ্ছাস আর খুশির ফোয়ারা।

ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের প্রায় ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার গাড়ী বহর যখন দূরন্ত গতিতে ছুটছিলো তখন তাকে পথে পথে থামিয়েছে অপেক্ষমান জনসমুদ্রের মহামিলন। সড়কের উভয় পাশে নারী-পুরুষ, আবাল-বৃদ্ধারা যেভাবে ঘন্টার পর ঘন্ট দাড়িয়ে থেকে নেতাকে একনজর দেখার তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলেছে, তখন নেতাও হাত নেড়ে অভিবাদনের প্রতি উত্তর দিয়েছে অকুন্ঠ হৃদয় উজাড় করা ভালবাসার আবেশে। চট্টগ্রাম নগরী থেকে শুরু করে সীতাকুন্ড পৌরসদর পর্যন্ত১১টি স্পটে সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় দেশ, মানুষের প্রতি ভালবাসা, দায়বদ্ধতা এবং তাদের ত্যাগের জন্য কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন কারামুক্ত হওয়া আসলাম চৌধুরী এফসিএ। তিনি গণতান্ত্রিক আন্দোলনের এ কাফেলাকে বেগবান রাখতে আবারও সকলকে সক্রিয় থাকার উদাত্ত আহবান যেমন জানিয়েছেন, তেমনি প্রতিটি অন্যায় আর অপরাধের আইনানুগ শাস্তির আওতায় আনারও দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) সকাল ১০ টায় বৈরী আবহাওয়া ও বৃষ্টি উপেক্ষা করে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারা ফটকে হাজার হাজার নেতাকর্মীর ভীড় লেগে যায়। এ সময় তিনি কারাগার থেকে বের হলে চট্টগ্রাম মহানগর ও তার নির্বাচনী এলাকা সীতাকুণ্ড বিএনপির হাজারো নেতাকর্মীরা ফুলেল শুভেচছায় তাকে বীরোচিত সংবর্ধনা প্রদান করেন।

আসলাম চৌধুরীর মুক্তির ব্যপারে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার মো. ইব্রাহীম বলেন, তিনি চট্টগ্রাম কারাগারে ছিলেন। তার জামিনে সকল কাগজ-পত্র যাচাই-বাছাই করে মঙ্গলবার সকাল দশটায় কারাগার থেকে তাকে মুক্তি দেওয়া হয় ।
এদিন কারা ফটকের সামনে ভোর থেকেই হাজার হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে উৎসব মূখর পরিবেশে লোকে লোকারণ্য হয়ে যায় । অনেক নেতাকর্মী একদিন আগেই নিউ মার্কেট এলাকায় অবস্থান নেয় প্রিয় নেতাকে দেখার অস্থিরতায়।

সকাল দশটায় তিনি জেল গেট থেকে, কোতোয়ালি, নিউ মার্কেট, লালখান বাজার, টাইগারপাস, জিইসি, ফয়েজলেক হয়ে একে খান মোড়ে অপেক্ষমান নেতাকর্মী ও সাধারণ জনতার মাঝে বক্তব্য রাখেন।

পরে একে খান থেকে সিটি গেইট, ফৌজদার হাট, ভাটিয়ারী, বার আউলিয়া, কুমিরা, বাঁশবাড়িয়া, বাড়বকুন্ড, মুরাদপুর, সীতাকুণ্ড, বড় দারগারহাট হয়ে সীতাকুণ্ড আসার পথে পৌরসভা বাজার পদক্ষিণ করে সীতাকুণ্ড বাজারে সীতাকুণ্ড বাসীর উদ্দেশ্যে পথ সভায় ব্যক্তব্য রাখেন।

এসময় ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুন্ডের প্রায় বিশ কিলোমিটার গাড়ির বহরের দৃষ্টি নন্দন এক চিত্র ফুটে ওঠে। নানান রঙের ব্যানার ফেস্টুনে সজ্জিত রাস্তার দু’পাশে লাখো জনতার ঢল নামে। বৈরি আবহাওয়ায় ঝুমবৃষ্টিকে উপেক্ষা করে লাখো সাধারণ জনতা দাঁড়িয়ে থেকে প্রিয় নেতাকে এক পলক দেখার তৃপ্তি লাভ করেন।

সীতাকুন্ড পথসভা শেষে পরবর্তীতে ফৌজদারহাট জলিল গেটস্থ নিজ বাড়ীতে ফিরে পারিবারিক কবরস্থানে জেয়ারত শেষে সেখানকার নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় ও সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন।

আরও পড়ুন