চুয়েটে বর্ণাঢ্য আয়োজনে মহান বিজয় দিবস উদযাপিত

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)-এর ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেছেন, “১৬ই ডিসেম্বর আমাদের বাঙালির ইতিহাসের সবচেয়ে গৌরবের দিন। এই বিজয় অর্জনে আমাদের হয়তো সময় কম লেগেছে, কিন্তু ত্যাগ করতে হয়েছে সবচেয়ে বেশি। পৃথিবীতে স্বাধীনতার এতো প্রাণের বিসর্জন খুবই বিরল। বিজয়ের অর্ধশতাব্দী পরেও আমরা স্বাধীনতার প্রকৃত উদ্দেশ্য পূরণে ব্যর্থ হয়েছি। স্বাধীনতা বিরোধী ও প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী এখনও দেশের অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দিতে তৎপর। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরতœ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন সোনার বাংলার অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ উপহার দিয়েছেন। এখন তিনি ৪র্থ শিল্পবিপ্লবের সাথে এগিয়ে নিতে স্মার্ট বাংলাদেশের রূপকল্প ঘোষণা করেছেন। এই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদের প্রকৌশল বিশ^বিদ্যালয়গুলোকে অগ্রগামী ভূমিকা রাখতে হবে। বর্তমান বৈশি^ক অর্থনৈতিক মন্দার সঙ্কটকে পূঁজি করে ভার্চুয়াল জগতে ডিজিটাল প্রযুক্তির অপব্যবহার করে একটি প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী নানামুখী অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই ব্যাপারে আমাদের শিক্ষিতসমাজকে প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে।” আজ ১৬ই ডিসেম্বর (শুক্রবার) ২০২২ খ্রি. সকাল ৯.৩০ ঘটিকায় চুয়েট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের পাদদেশে আয়োজিত মহান বিজয় দিবস-২০২২ উপলক্ষ্যে আয়োজিত “জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সুনীল ধর, তড়িৎ ও কম্পিউটার কৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মশিউল হক, স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল হাছান। ইইই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সম্পদ ঘোষ, মানবিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জনাব নাহিদা সুলতানা এবং উপ-পরিচালক (তথ্য ও প্রকাশনা) মোহাম্মদ ফজলুর রহমানের যৌথ সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন বিভাগীয় প্রধানগণের পক্ষে গণিত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মোছাম্মৎ তাহমিনা আক্তার, প্রভোস্টগণের পক্ষে শামসেন নাহার খান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ফারজানা রহমান জুথী, স্টাফ ওয়েলফেয়ার কমিটির সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. জামাল উদ্দিন আহাম্মদ, শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. এম.কে. জিয়াউল হায়দার, কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি আমিন মোহাম্মদ মুসা, স্টাফ এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. জামাল উদ্দিন, শিক্ষার্থীদের পক্ষে রিয়ানা এবং কামরুল হাছান। উক্ত অনুষ্ঠানমালায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রীগণ অংশগ্রহণ করেন।

এর আগে শুক্রবার সূর্যোদয়ের সাথে সাথে বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে উপাচার্য ভবনের সামনে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিনব্যাপী কর্মসূচীর সূচনা হয়। পরে পৌনে ৯টায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম চুয়েট পরিবারের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর একে একে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী ও ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে মহান মুক্তিযুদ্ধে চুয়েটের দুই শহিদ শিক্ষার্থী শহিদ মোহাম্মদ তারেক হুদা ও শহিদ মোহাম্মদ শাহ-এর কবর জেয়ারত করা হয় এবং বাদে জুমা মহান মুক্তিযুদ্ধে নিহত বীর শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। বিজয় দিবসের অন্যান্য কর্মসূচীর মধ্যে ছিল- শিক্ষক বনাম শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা বনাম কর্মচারীদের প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচ, ছাত্র-ছাত্রীদের রচনা প্রতিযোগিতা, শিশুকিশোরদের দৌঁড় ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, কবিতা আবৃত্তি ও দেশাত্মবোধক গান, ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রভৃতি।

আরও পড়ুন