এম জামশেদ আহমেদ >>>> গত বছরের আজকের এইদিনে অর্থাৎ ১০ ডিসেম্বর রাতে অনেক চেষ্টারপরও চোখজোড়া এক করতে পারছিলাম না, কোন এক অজানা কারণে নির্ঘুম, রাত তখন সাড়ে ১১ টা। ফেসবুক দেখতে দেখতে হঠাৎ চোখে পড়লো একটি শোক সংবাদ : মীরসরাই উপজেলার ১১ নং মঘাদিয়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার নুরুল আবছার চট্টগ্রাম শহররে একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাহি রাজিউন)। প্রিয় মানুষটির মৃত্যু কোনভাবে মেনে নিতে পারছিলাম না। পরদিন ১১ ডিসেম্বর হাজারো শোকার্ত মানুষের উপস্থিতিতে মলিয়াইশ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আবছার ভাইয়ের জানাযায় শরিক হলাম। স্কুলের মাঠের দক্ষিণ পাশ ঘেঁষে হেতালিয়া খাল লাগোয়া চাঁদপুর-বিশুমিয়া সড়কটি পশ্চিমে মধ্যম মুরাদপুর গ্রাম (আমাদের গ্রাম) ও পূর্বদিকে মীরসরাই সদরে গিয়ে মিশেছে। সড়কের দক্ষিণ পাশে বাড়িটি (তিনঘরিয়াটোলা গ্রাম) নুরুল আবছার মেম্বারের বাড়ি। সড়কটি হয়ে আমরা প্রতিদিন মলিয়াইশ স্কুল, সাধুর বাজার কিংবা প্রয়োজনে মীরসরাই সদরে গিয়েছি। সে ছোটবেলায় প্রতিদিন যার সাথে দেখা, সাক্ষাৎ হয়েছে, তিনি প্রিয় মানুষ আবছার ভাই । শিক্ষা জীবনের গন্ডি পেরিয়ে যারা একটুখানি প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন, সকলেই এলাকার বাহিরে চলে গিয়েছেন। কিংবা অখ্যাতই থেকেছেন। কিন্তু আবছার ভাই ব্যতিক্রম, তিনি এলাকাতেই থেকেছেন এবং প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন। পিতা-মাতার একমাত্র ছেলে ছিলেন। পৈত্রিক এ বাড়িটিই বর্তমানে আবছার মেম্বার বাড়ি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। তিনি মলিয়াইশ স্কুল (প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উচ্চ বিদ্যালয়) এবং পরবর্তীতে মীরসরাই কলেজে পড়েছেন। আমরা সব ভাই বোনেরা মলিয়াইশ স্কুলে পড়েছি এবং ক্লাশে স্থান পাওয়া ছিলাম। তাঁরও প্রতিটি ক্লাশে স্থান ছিল। তিনি ছিলেন বড় ভাই শেহাব উদ্দিনের ১ বছরের জুনিয়র, আমার ৩ বছরের ও আলা উদ্দিনের ৪ বছরের সিনিয়র । প্রতি বছর বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফলে প্রকাশের পর তাঁর সম্পর্কে আমাদের ঘরে আলোচনা হতো। এমনও দেখা যেতো , আমরা তিন ভাই এবং আবছার ভাই ৪ টি ক্লাশে প্রথম হয়েছি। তিনি আবৃত্তি করতেন। তাঁর কন্ঠ ছিল স্পষ্ট। স্কুলের বিভিন্ন অনুষ্ঠান বা জাতীয় দিবসে বক্তৃৃতা করেছেন। প্রতি বছর স্কুলকেন্দ্রিক নাটক হতো। নবাব মির্জা মুহম্মদ সিরাজ উদ্দৌলা, টিপু সুলতান মঞ্চস্থ হতো। এসব নাটকে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেছেন। আব্বার ছাত্র ছিলেন। তাঁর পিতা জাকির হোসেন ব্যবসায়ী ও কৃষিজীবী, অবস্থাসম্পন্ন ছিলেন এবং আব্বার সাথে ছিল বিশেষ সখ্যতা। এদিক থেকে তিনি আব্বার স্নেহাস্পদ ছাত্র ছিলেন। এলাকায় ১৯৭১ স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময় হতে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আবহ গড়ে উঠেছিল। লেখাপড়া, রাজনীতি, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ইত্যাদি সর্বত্রই তিনি সরব ছিলেন। ১৯৭৩ সনে দ্বিতীয় বিভাগে মানবিক বিভাগ থেকে এস.এস.সি পাশ করেন। অত:পর মীরসরাই কলেজে অধ্যয়ন করেন। ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধের পরে অনেকের সাথে তিনিও বিরোধী জাসদ সমর্থিত ছাত্রলীগের সক্রিয় সমর্থক ছিলেন। ১৯৭৯ সনে সংসদ নির্বাচনে জাসদ প্রার্থীর সমর্থনে মিছিল করার সময় সাধুর বাজারে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের হামলায় আহত হয়েছিলেন। স্কুলের সামনে পোলের গোড়ায় প্রাক্তন ছাত্রদের আড্ডা ও সমাবেশের স্থান হিসেবে গড়ে উঠে, সেখানে রীতিমত আড্ডা দিতেন। আড্ডা ও সংগঠনের সাথে জড়িয়ে পড়ায় তাঁর লেখাপড়ার বিঘ্ন ঘটে।
শিক্ষা জীবন শেষ করে তিনি মীরসরাই সমবায় অফিসে চাকুরি নেন। এসময় এলাকার অনেকেই সমবায় কার্য্যক্রমে যুক্ত হয়ে উপকৃত হয়েছেন। সমবায়ে চাকুরির পাশাপাশি তিনি মীরসরাই রেড ক্রিসেন্টে যোগ দিয়ে আর্তমানবতার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেন। একসময় মীরসরাই রেড ক্রিসেন্টের সভাপতি ছিলেন। এলাকার উদ্যমী যুব সমাজকে নিয়ে সক্রিয় রেড ক্রিসেন্ট টিম গঠন করেন। ঝড়ের পূর্বাবাস বা সংকেত থাকলে পুরো টিম নিয়ে প্রচারে নেমে পড়তেন। দুর্যোগকালীন সময়ে সংকটাপন্ন মানুষের দৌরগোড়ায় ত্রাণ পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতেন। জেলা ও উপজেলায় রেড ক্রিসেন্টের বিভিন্ন কর্মসূচীতে তাঁকে দেখা যেতো। মৃত্যুর পূর্ববর্তী বছরেও ঝড়ের পূর্বাবাস থাকায় সদস্যদের নিয়ে প্রচার কার্য্য চালাতে দেখা যায়। ২০১২ সনে প্রতিষ্ঠিত স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন ”দুর্বার প্রগতি সংগঠন”র আজীবন সদস্য ছিলেন। দুর্বার’র বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিয়ে যুব সমাজকে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন।
তিনি আর্থিকভাবে সচ্ছল ছিলেন। এলাকায় সমাদৃত, ব্যাপক জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছিলেন। তাই একসময় জনপ্রতিনিধি হওয়ার সাধ জাগে। মীরসরাই উপজেলার ১১ নং মঘাদিয়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য পদে প্রতদ্বেন্দ্বীতা করে জয়ী হন। এলাকায় সালিশ ইনসাফ করতেন। জায়গাজমির মাপঝোপ, দলিল, খতিয়ান বুঝতেন। স্থানীয় বিরোধ, জমি সংক্রান্ত বিরোধ মিটিয়ে দিতেন। বিয়ে-শাদী, সামাজিক অনুষ্ঠানে তার উপস্থিতি লক্ষ্যনীয়। সম্মানিত ব্যক্তি হিসেবে স্থান করে নিয়েছেন, এলাকায় আবশ্যকীয় হয়ে পড়েছিলেন। বাজারে একটি কক্ষকে অফিসঘর হিসেবে ব্যবহার করতেন। পরিবর্তিত স্থানে সমবয়সীদের সাথে গল্পগুজব ও আড্ডা দিতেন। সকাল, বিকাল বিভিন্ন কাজে তাঁর সাথে অনেকেই যোগাযোগ করতেন। সাধুর বাজারে ব্যবসায়ীদের পরামর্শক হিসেবে কাজ করতেন। বাজার ক্রমান্বয়ে চতুর্দিকে সম্প্রসারিত হতে থাকে। এসময় সড়কের পাশে তিনি একটি মার্কেট নির্মাণ করেন। অন্যদেরকেও ব্যবসা সম্প্রসারণে পরামর্শ দেন। বাড়ির সামনে নিজ জায়গায় ১ টি মসজিদ স্থাপন করেন। আশপাশের মানুষ সেখানে নামাজ পড়েন। ইউপি সদস্য হওয়ার সুবাদে এলাকায় ব্রীজ, কালভার্ট নির্মাণ, রাস্তাঘাট সংস্কার ও উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন। গরীব-দুঃখী মানুষের ন্যায্যতারভিত্তিতে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতার ব্যবস্থা করে দিতেন। এলাকার কেউ সরকারী সুবিধা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হওয়ার নজির নেই। মানবসেবায় আনন্দ পেতেন তিনি। এলাকাবাসী তাঁকে পঞ্চমবারের মত ইউপি সদস্য নির্বাচিত করেছে। নির্বাচিত সদস্য থাকা অবস্থায় প্রায় ৬৫ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। সমগ্র দেশে যেন নতুন উদাহরন সৃষ্টি করলেন।
আবছার ভাই ১৯৮০ সনে কমবয়সে বড়তাকিয়া পোলমোগরা গ্রামে বিয়ে করেন। তাঁর বিয়েতে এবং বৌভাত অনুষ্ঠানে মলিয়াইশ স্কুলের জুনিয়র ও সিনিয়রদের বিশাল দল মহাসমারোহে অংশ নিয়েছে। তাঁর ৪ মেয়ে ও ১ ছেলে। সকলকে শিক্ষিত হিসেবে গড়েছেন। সর্বকনিষ্ট ছেলে নাহিদুল আনসার রুপালী ব্যাংক লিমিটেডে সরাসরি উধ্বতন কর্মকর্তা পদে নিয়োগ পেয়ে যোগদান করেছে। ছেলেমেয়ে সবাই মলিয়াইশ স্কুলে পড়েছে। উল্লেখ্য, তাঁর দুই মেয়ের জামাইও মলিয়াইশ স্কুলের ছাত্র ছিলেন। বড় মেয়ের বিয়ের পরে আমাকে মেয়ের জামাইয়ের প্রথম পরিচয় মলিয়াইশ স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র বলেছেন।
আবছার ভাই ৫ মেয়াদে মলিয়াইশ উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সদস্য ছিলেন। তিনি ১৯৯৪-১৯৯৬, ১৯৯৭-১৯৯৯, ২০০০-২০০৩, ২০০৪-২০০৬, ২০০৬-২০০৯ পর্যন্ত ৫ মেয়াদে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিচালনা পরিষদের সদস্য এবং ২০০৬-২০০৯ পর্যন্ত এডহক কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৪ সনে মলিয়াইশ উচ্চ বিদ্যালয়ে রজতজয়ন্তী অনুষ্ঠানে সার্বিক ব্যবস্থাপনায় তিনি সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। মলিয়াইশ উচ্চ বিদ্যালয় প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী পুণর্মিলনী-২০১৪ উদযাপন পরিষদের সদস্য, অভ্যর্থনা উপ-পরিষদের আহবায়ক হিসেবে ভূমিকা রাখেন। মলিয়াইশ উচ্চ বিদ্যালয় সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব উৎসব-২০১৮ এ উদযাপন পরিষদের তিনি যুগ্ম-আহবায়ক ছিলেন। রজতজয়ন্তী প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী পুণর্মিলনী-২০১৪ এবং সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব ম্যাগাজিনে তাঁর আলাদা ছবি ছাপানো হয়েছে।
আমরা ৬ ভাই ও ৩ বোন মলিয়াইশ স্কুলে পড়েছি। আব্বা মৌলভী নুরুল হুদা মাস্টার ১৯৬৮-১৯৭১ সময়ে দ্বিতীয় মেয়াদে (প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে) অভিভাবকদের প্রত্যক্ষ ভোটে মলিয়াইশ উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের নির্বাচিত সদস্য ছিলেন। ৩য় ভাই মোঃ আলা উদ্দিন ১৯৭৭ সনে এস.এস.সি. পরীক্ষায় মানিবিক বিভাগ থেকে কুমিল্লা বোর্ডে মেধা তালিকায় ৭ম স্থান অধিকার করে কৃতিত্ব অর্জন করে। মাইডাসে সহকারী মহাব্যবস্থাপক পদে চাকরিকালীন সময়ে ২০০৬ সালের ২৩ এপ্রিল বগুড়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে মৃত্যুবরণ করেন। এসময় তিনি এডহক কমিটির সভাপতি ছিলেন। খবরটি পাওয়ার সাথে সাথে কৃতি ছাত্রের অকাল মৃত্যুতে তাৎক্ষনিক স্কুল ছুটির ব্যবস্থা করেন। আলা উদ্দিনের মৃত্যুর ৪ দিন পরে মলিয়াইশ উচ্চ বিদ্যালয়ে ১ম শোকসভা হয়। শোকসভায় নুরুল আবছার ভাই সভাপতিত্ব করেন এবং বক্তব্য রাখেন। ২০১৮ সালের ২৩ এপ্রিল ১২ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে আরেকটি স্মরণসভা হয়, সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তিনি বক্তব্য রাখেন।
ছাত্র জীবন থেকে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত স্কুলের, এলাকার নানা কর্মকান্ডে তিনি জড়িত থেকে স্কুল মাঠে বক্তব্য দিয়েছেন। প্রায় সব অনুষ্ঠানে বক্তার তালিকায় ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মরহুম শাহাব উদ্দিন দীর্ঘসময় মলিয়াইশ উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ছিলেন। তাঁকে বিদ্যালয় উন্নয়নের রুপকার বলা হয়ে থাকে। পরবর্তী অবস্থানে আবছার ভাইকে দেখা যেতে পারে।
তিনি নিজে ফেসবুকে সরব ছিলেন। বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডের পোস্ট দিতেন। আমার সাথে দেখা হলে বলতেন, জামশেদ তুমি মনে হয় এখন অবসরে, সবসময় ফেসবুকে দেখা যায়। আমার পোস্টে লাইক, শেয়ার দিতেন অর্থ্যাৎ ম্যানুয়েল থেকে ডিজিটাল সবধরনের যোগাযোগের ক্ষেত্রে অগ্রগামী ছিলেন। ছেলে নাহিদুল আনসারের ব্যাংকার্স রিক্রুটমেন্টে নিয়োগ দীর্ঘদিন পেন্ডিং ছিল, দেখা হলেই বলতেন তাঁর ছেলের নিয়োগটা হচ্ছে কিনা। আমি সাহস দিয়ে বলতাম, অবশ্যই হবে।
নিজ বাড়ি, সাধুর বাজার, মলিয়াইশ স্কুল মিলিয়ে তিনি যেন ত্রিভুজ আকৃতির প্রেম গড়েছেন। সারাজীবন এলাকার মানুষ তাঁকে এ ত্রিভুজ অবস্থানে সবচেয়ে বেশী দেখেছে। সাধুর বাজারেই হার্ট এ্যাটার্ক হয়েছে। চট্টগ্রাম শহরের একটি হাসপাতাল হতে এ্যাম্বুলেন্সে লাশ হয়ে ফিরেছেন। মলিয়াইশ স্কুল মাঠে সর্বস্তরের মানুষের উপস্থিতিতে বিশাল জমায়াতে প্রিয় মানুষটির জানাযা সম্পন্ন হয়েছে। নিজ বাড়ির সামনে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়েছে। মৃত্যু ও দাফনের ক্ষণটিও যেন ত্রিভুজ প্রেমের সাথে জড়িয়ে আছে।
শিক্ষা, সংস্কৃতি, ক্রীড়া, সমাজসেবা, নেতৃত্ব ইত্যাদি সর্বক্ষেত্রে তাঁর ছিল সদম্ভ পদচারণা। তাঁর জীবন পর্যালোচনায় দেখা যায়, মানবতার ফেরিওয়ালা যেন মানবকল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। যে মাঠে তিনি সারিবদ্ধভাবে সহপাঠীদের সাথে জাতীয় সংগীত গেয়েছেন, পাক্ সার জমিন সাদ বাদ – আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি, ফুটবল, ভলিবল খেলেছেন, নাটকে অভিনয় করেছেন, আবৃত্তি করেছেন, বিশাল সমাবেশে বক্তব্য রেখেছেন, আড্ডা দিয়েছেন, ছাত্র, যুব, গণমানুষকে সংগঠিত করেছেন, মানবতার ফেরি করেছেন। সে মাঠেই শুভানুধ্যায়ী, সহপাঠি, গুণমুগ্ধ শ্রোতা সকলে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে তাঁর জানাযায় শরিক হয়েছেন। এলাকার হিন্দু সমাজ, গ্রাম পুলিশ মহিলা যারা এসেছিলেন, অদূরে নীরবে দাঁড়িয়ে শেষ শ্রদ্ধাটুকু জানিয়েছে।
প্রিয় আবছার ভাই সারাজীবন নিজ এলাকাতেই কাটিয়ে দিলে। সমাজের জন্য যা কিছু করলেন, এমন দৃষ্টান্ত বিরল। আপনার পরামর্শ ও সহযোগিতা নিয়ে এলাকায় উন্নয়নের স্বপ্ন দেখতাম। আমরা আপনাকে পছন্দ করতাম -আপনিও ঠিক তাই। আমরা নীরবে কাঁদছি। আপনি চলে গেলেন, নশ্বর পৃথিবীতে হয়তো আমরা কেউই থাকবো না, কিন্তু এলাকার প্রতিটি পরিবারে, মানুষের অন্তরে আপনি চিরঞ্জীব-চিরভাস্বর থাকবেন। আজ ১০ ডিসেম্বর প্রিয় নুরুল আবছার ভাইয়ের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। মহান রাব্বুল আলামীন তাঁকে বেহেশত নসীব করুন। আমীন।
# এম জামশেদ আহমেদ, সহকারী মহাব্যবস্থাপক (অবঃ), বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, Email : jamshedbkb@gmail.com