দেশের মানুষের দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামে অর্জিত স্বাধীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রাষ্ট্র ব্যবস্থায় আর কারো তাঁবেদারি চলবেনা। এদেশের মুক্তিকামী জনতা বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদে উদ্ধুদ্ধ হয়ে যে কঠিন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটিয়েছে তা সমসাময়িক বিশে^ অনন্য নজির। ছাত্র জনতার মিলিত ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মুখে পতিত স্বৈরাচারের সুবিধাভোগীরা এখনও নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। কিন্তু দেশের মানুষ আর নিজেদের স্বাধীনতা বিকিয়ে দিয়ে কারো আজ্ঞাবহ কিংবা নতজানু হয়ে থাকবেনা। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামোয় গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে মৌলিক অধিকার ফিরে পাবে বলে দাবি করেছেন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমেদ।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগের শোভাযাত্রার পূর্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত এবং আহতদের অধিকাংশই বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী। শুধু কেবল ছাত্র আন্দোলনেই বিএনপি ৪২২ নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন। ১১৩ জনের বেশি ছাত্রদলের কর্মী। স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে বিগত দিনে আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে বিএনপির প্রায় ১৭শ নেতাকর্মী আহত-নিহত হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম থেকেই স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছিলেন আমাদের নেতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আর স্বৈরাচারী হাসিনা বিরোধী আন্দোলনে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আগামীর রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমান যে নেতৃত্ব দিয়েছেন তা ইতিহাসের পাতায় লিপিবদ্ধ থাকবে। দীর্ঘ ১৭ বছরের রক্ত¯œাত যুদ্ধের মধ্য দিয়ে যে স্বৈরাচারের পতন ঘটেছে, তার লক্ষ্য পূরণে অতিদ্রæত একটি গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা কায়েম অতীব জরুরী।
তিনি বলেন, জুলাই আগস্টের আন্দোলন কেবল ছাত্রদের দ্বারা সংঘটিত হয়েছে এমনটি ভাবলে ভুল হবে। এ আন্দোলনে বিএনপিসহ এদেশের গণতন্ত্রকামী আপামর জনতার ত্যাগের ফসল। পুনরুদ্ধার হওয়া গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক এবং স্থায়ী রূপ দিতে অবিলম্বে নির্বাচনই হবে একমাত্র সুষ্ঠু সমাধান।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব নাজিমুর রহমানের পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূইয়া, জয়নাল আবেদীন ফারুক, গোলাম আকবর খোন্দকার, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিভাগীয় শোভাযাত্রার সমন্বয়কারী মাহবুবের রহমান শামীম, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন, সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর।
এতে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ভিপি হারুনুর রশীদ, ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি, সাবেক হুইপ শাহজাহান চৌধুরী, খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি, সাবেক এমপি আব্দুল ওয়াদুদ ভুঁইয়া, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ গ্রাম সরকার সম্পাদক বেলাল আহমেদ, সদস্য সাচিং প্রু জেরী, জালাল উদ্দীন মজুমদার, মশিউর রহমান বিপ্লব, হুম্মাম কাদের চৌধুরী, রাঙ্গামাটি জেলা বিএনপির সভাপতি দিপেন তালুকদার দিপু, উত্তর জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক এম এ হালিম, ফেনী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল, কক্সবাজার জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এড. শামীম আরা স্বপ্না, নোয়াখালী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এড. আবদুর রহমান, বান্দরবান জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রেজা প্রমূখ।
এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগের আওতাধীন বিভিন্ন জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণ উক্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন। সভা শেষে এক বর্ণাঢ্য র্যালী কাজির দেউড়ী, জুবলী রোড, নিউ মার্কেট হয়ে লালদীঘিতে গিয়ে শেষ হয়। এদিন পুরো চট্টগ্রাম নগরী যেনো মিছিলের নগরীতে পরিণত হয়। লাখ লাখ মানুষ বিভিন্ন ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে র্যালীতি অংশগ্রহণ করেছে, যা ছিলো খুবই মনোমুগ্ধকর।