তুমব্রু সীমান্তে কাটছেনা মিয়ানমার আতঙ্ক

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে প্রায় মাসখানেক ধরে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির সংঘর্ষ ও গোলাগুলি চলছে। এতে সীমান্তে বসবাসকারী বাংলাদেশিরা আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।পাশাপাশি তারা দিনে এলাকায় না থেকে উখিয়াসহ অন্যান্য এলাকায় তারা সময় কাটাচ্ছে।

তুমব্রু এলাকার বসবাসকৃত সংবাদকর্মী নুর মোহাম্মদ সিকদার জানান,সীমান্তে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির সংঘর্ষ ও গোলাগুলি চলছে।এতে গুলির যে আওয়াজ শুনা যায় তাতে আতঙ্কে নিরাপত্তাহীন মনে হয় তাই দিনে উখিয়ায় চলে যায়, বিকাল হলে বাড়িতে চলে যায়।সে আরও জানান আমার মতো সীমান্তে বসবাসকৃত অনেকে আতঙ্কে এলাকায় না থেকে অন্যত্রে রাত যাপন করছে।সে আরও জানান সীমান্তে বিজিবির সদস্যরা কঠোর নিরাপত্তা ও সর্তক অবস্থায় রয়েছে।

বুধবার এবং বৃহস্পতিবার সীমান্তে গুলাগুলি বন্ধ থাকার পর শুক্রবার (৯‌ সেপ্টেম্বর) বিকাল থে‌কে আবা‌রও গোলাগুলি ও সংঘর্ষ শুরু হয়। যা এখনও অব্যাহত রয়েছে।

শ‌নিবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত টানা গোলাগু‌লির শব্দ শুনেছেন এপারের বাসিন্দারা। গোলাগু‌লির কার‌ণে শুক্রবার এক‌টি গু‌লি এসে প‌ড়েছে বাংলা‌দে‌শের তুমব্রু সীমান্তের এপারে।

স্থানীয় আরেক সংবাদকর্মী মাহমুদুল হাসান জানান, প্রায় মাসখানেক ধরে ঘুমধুম ইউনিয়‌নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাইশ ফাঁড়ি বিওপির সীমান্ত পিলার ৩৬-এর বিপরীতে আনুমানিক তিন কিলোমিটার দক্ষিণ-পূ‌র্বে মিয়ানমারের মেধাইক ক্যাম্প এলাকায় দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির সংঘর্ষ ও গোলাগুলি চলছে। সংঘর্ষ ও গোলাগুলির কারণে প্রতি‌দিন আনুমা‌নিক ৪০০-৫০০ রাউন্ড গুলির শব্দ ও ২০-২৫টি মর্টার শেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। এরই মধ্যে প্রথমবার মর্টার শেল, দ্বিতীয়বার গোলা ও তৃতীয়বার গু‌লি এসে সীমা‌ন্তের এপা‌রে পড়েছে। এতে হতাহ‌তের ঘটনা না ঘটলেও স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

তুমব্রু সীমান্তে বসবাসকারী রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ বলেন, ‘শুক্রবার বিকাল থেকে আবারও সীমান্তের ওপারে গোলাগুলি শুরু হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গোলাগুলির শব্দ শুনেছি আমরা। এ নিয়ে সীমান্তে আতঙ্কের মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছি।

ঘুমধুম ইউনিয়‌নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘গত বুধবার ও বৃহস্প‌তিবার গোলাগুলি বন্ধ থাকার পর শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে আবারও গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। সারা‌দিন প্রচুর গোলাগু‌লির শব্দ শোনা গে‌ছে। এতে আতঙ্কে আছেন সীমা‌ন্তের এপারের বাসিন্দা ও শূন্যরেখায় বসবাসকারী রোহিঙ্গারা।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সালমা ফেরদৌস বলেন, ‘দু‌দিন বন্ধ থাকার পর সীমান্তের ওপারে আবা‌রও দু‌দিন ধ‌রে সংঘর্ষ ও গোলাগুলি চলছে। আমাদের সীমান্তে সবাইকে সতর্ক থাক‌তে ব‌লে‌ছি। সেইসঙ্গে প্রতি‌ মুহূর্তের খবর রাখছি। স্থানীয়দের আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য বলেছি।

এ বিষয়ে বান্দরবানের পুলিশ সুপার (এসপি) তারিকুল ইসলাম তারিক বলেন, আমাদের সীমান্তে গোয়েন্দা নজরদারি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এপারের বাসিন্দাদের আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন