ঈদের আগে থেকেই পতনের মধ্যে ছিল দেশের শেয়ারবাজার। এর মধ্যে আবার বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের সিদ্ধান্তের কথা জানায় সরকার। ফলে দরপতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। এতে করে পুঁজি হারিয়ে দিশেহারা বিনিয়োগকারীরা।
সোমবার (১৮ জুলাই) লোডশেডিংয়ের ঘোষণা দেওয়ার পরই শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়। এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ৮৭ পয়েন্ট কমে যায়। ক্রয় আদেশের ঘর শূন্য হয়ে পড়ে ২৭৫ প্রতিষ্ঠানের।
এ পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) শেয়ারবাজার খুলতেই বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ দিনের সর্বনিম্ন দামে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট বিক্রির আদেশ দিতে থাকেন। ফলে সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের ক্রয় আদেশের ঘর শূন্য হয়ে পড়ে। লেনদেনের শেষপর্যন্ত অব্যাহত থাকে ক্রেতা সংকট।
ফলে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে মাত্র ২১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৪৪টির। আর ১৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম কমার তালিকায় স্থান করে নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৪৩টির শেয়ার ও ইউনিটের দাম দিনের সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে গেছে। এরপর লেনদেনের বেশিরভাগ সময় এসব প্রতিষ্ঠানের ক্রয় আদেশের ঘর শূন্য পড়ে থাকে।
এতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৬৩ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ১৫৩ পয়েন্টে নেমে গেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ২২ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ২১৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ১১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৪৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
এর মাধ্যমে ঈদের পর লেনদেন হওয়া ছয় কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে দরপতন হলো। ঈদের আগে শেষ পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তিন কার্যদিবসই পতন দিয়ে পার হয়। ফলে শেষ ১১ কার্যদিবসের মধ্যে নয় কার্যদিবসই পতনের মধ্যে থাকলো শেয়ারবাজার।
মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি বাজারটিতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩১৯ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৫১৫ কোটি ২৯ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ১৯৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে ২০২১ সালের ৫ এপ্রিলের পর ডিএসইতে সর্বনিম্ন লেনদেনের ঘটনা ঘটলো। গত বছরের ৫ এপ্রিল বাজারটিতে ২৩৬ কোটি ৬০ লাখ টাকার লেনদেন হয়। এরপর ডিএসইতে আর এত কম লেনদেন হয়নি।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ২১৪ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ৭০ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ২৮৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৯টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৪৬টির এবং ২১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।