এবার প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন দখলে নিয়েছে বিক্ষুদ্ধ জনতা

শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোতে প্রেসিডেন্টের বাসভবন ও অফিসে ঢুকে পড়ার পর প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনেও বিক্ষোভকারীরা ঢুকে পড়েছে বলে জানা যাচ্ছে। খবর বিবিসি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী রানিল বিক্রামাসিংহের বিছানা ও অন্যান্য আসবাবের ওপর বসে অনেক বিক্ষোভকারী সেলফি তুলছেন। বাইরে সে সময় জাতীয় পতাকা হাতে শতশত মানুষ সরকারের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দিচ্ছে।

এর আগে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদেও একই দৃশ্য তৈরি হয়। হাজার হাজার বিক্ষুব্ধ জনতা জোর করে কলম্বোতে প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকশার বাসভবনে ঢুকে পড়ে।

বিক্ষোভকারীদের নিরস্ত করতে কাঁদানে গ্যাসের পাশাপাশি পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোড়ে, কিন্তু তাদের ঠেকানো সম্ভব হয়নি।
প্রেসিডেন্ট এখন কোথায় আছেন জানা যায়নি, তবে প্রতিরক্ষা দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, তাকে অজ্ঞাত কোন নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

শ্রীলঙ্কায় নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকটের কারণে খাবার সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে প্রচণ্ড টান পড়ায় জ্বালানি তেল, খাদ্য এবং ওষুধ পর্যন্ত আমদানি করতে পারছে না সরকার। এরই প্রেক্ষাপটে সরকারের বিরুদ্ধে ‘আর্থিক অব্যবস্থাপনার’ অভিযোগে গত কয়েক মাস ধরে শ্রীলঙ্কার সর্বস্তরের মানুষ বিক্ষোভ করছে।

কিন্তু শনিবার পরিস্থিতি চরম আকার নেয় যখন সারা দেশ থেকে হাজার হাজার মানুষ কলম্বোতে এসে শহরের যে এলাকায় সরকারি অফিস-আদালত এবং মন্ত্রী কর্মকর্তাদের বাসভবন রয়েছে সেখানে ঢুকে পড়ে।

এক পর্যায়ে ‘গোটা গো হোম’ (গোটা বাড়িতে চলে যাও) স্লোগান দিতে দিতে অনেক মানুষ জোর করে প্রেসিডেন্টের বাসভবনে ঢুকে পড়ে।

এ দিকে প্রধানমন্ত্রী বিক্রামাসিংহের অফিস থেকে জানানো হয়েছে, একটি ‘সর্বদলীয় সরকার’ গঠনের লক্ষ্যে এবং জনগণের ‘নিরাপত্তার স্বার্থে’ তিনি পদত্যাগ করতে রাজি।

জানা গেছে, দলের নেতাদের তিনি এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন।

শ্রীলঙ্কার বিরোধী দলগুলো বেশ কিছুদিন ধরেই একটি সর্বদলীয় সরকার গঠনের দাবি জানাচ্ছিল। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, শনিবার রাজধানীতে নজিরবিহীন যে জনরোষ দেখা যাচ্ছে তাতে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেওয়া ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর সামনে এখন কোনো বিকল্প হয়তো নেই।

আরও পড়ুন