কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্প গুলোর পাশে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে পশুর হাটে ক্রয়-বিক্রি শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকালে উখিয়া-টেকনাফ উপজেলার হাটগুলো ঘুরে দেখা যায়, আগাম হাটগুলো থেকে অধিকাংশ গরু কিনছেন রোহিঙ্গা নাগরিকরা। নিজেদের টাকায় কোরবানি করার জন্য গরু কিনছেন তারা। রোহিঙ্গাদের মাঝে গরু বিক্রির জন্য ক্যাম্পের আশপাশে কোরবানির পশুর অস্থায়ী হাট বসেছে।
উখিয়ার দারোগা বাজার, টেকনাফ গরুর হাট বাজার গিয়ে দেখা যায়, বাজারে শত শত গরু বিক্রি হচ্ছে। বেশিরভাগ ক্রেতাই রোহিঙ্গা।
আব্দুল আমিন নামের এক বিক্রেতা জানান, তিনি উখিয়ার টাইপালং এলাকা থেকে একটি গরু নিয়ে এসেছিলেন। সেটি ১ লাখ ২৫ হাজার টাকায় লম্বাশিয়া ক্যাম্পের এক রোহিঙ্গা নাগরিকের কাছে বিক্রি করেছেন।
আলগীর নামের আরেক বিক্রেতা জানান, ঘরের দুটি গরু হাটে এনেছিলেন। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কয়েকজন দুই লাখ ১৫ হাজার টাকায় গরু দুটি কিনে নিয়ে যান।
উখিয়া দারোগাবাজার কোরবানির হাটের ইজারাদার জানান, কোরবানির হাটে পশু ক্রয় বিক্রয় জমে উঠেছে। ক্রেতাদের মধ্যে কে বাংলাদেশি আর কে রোহিঙ্গা বোঝা মুশকিল।
টেকনাফের হ্নীলা বাজারে পশুর হাটেও সোমবার প্রচুর গরু-মহিষ বিক্রি হয়েছে। অধিকাংশ গরু রোহিঙ্গারা কিনেছেন বলে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
এদিকে কোরবানিকে সামনে রেখে উখিয়ার কুতুপালং, বালুখালী ও থাইংখালী, হ্নীলা, লেদা, জাদিমুড়া কয়েকটি অস্থায়ী কোরবানির হাট বসানো হয়েছে। স্থানীয় প্রভাবশালীরা রোহিঙ্গাদের কাছে গরু বিক্রির জন্য এসব হাট বসিয়েছেন।
বেসরকারি সংস্থা অধিকার বাস্তবায়ন কমিটি উখিয়ার সভাপতি শরিফ আজাদ জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রায় মানুষ মিয়ানমার থেকে ইয়াবা এনে ব্যবসা করে অনেক টাকার মালিক হয়ে গেছেন। তাই তারা নিজের টাকায় কোরবানি দিতে শুরু করেছেন। রোহিঙ্গারা এখন আর কোরবানিতে ত্রাণের মাংসের জন্য বসে থাকে না।
এব্যাপারে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী জানান, রোহিঙ্গারা ব্যক্তিগতভাবে নিজের টাকায় কোরবানির দেওয়ার জন্য যেভাবে বাজার থেকে গরু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন, এতে স্থানীয়দের জন্য কোরবানির গরুর সংকট হবে।
এ বিষয়ে উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, রোহিঙ্গাদের মাঝে গরু বিক্রির জন্য কয়েকজন প্রভাবশালী থাইংখালী ও বালুখালী ক্যাম্পের পাশে অস্থায়ী পশুর হাট বসিয়েছেন। এই হাটগুলোর কোনও বৈধতা নেই। হাট থেকে ইজারার নামে এক ধরনের চাঁদাবাজি করছে প্রভাবশালীরা।