আজিমপুর কবরস্থানে লাশ দাফন ফ্রী”র দাবিতে মানববন্ধন

আজিমপুর কবরস্থানে পতিত শেখ হাসিনার শাসনামলে তারই ভাতিজা ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নুর তাপসের মেয়র থাকালীন সময়ে লাশ দাফনে এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।সেবা ধর্মী সিটি কর্পোরেশন কে বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের আদলে সকল খাতই লাভজনক করার উদ্যোগ নেয়া হয়।রাস্তাঘাট, বাসটার্মিনাল, সিএনজি,লেগুনা স্ট্যান্ড,বাড়ি বাড়ি হতে ময়লা অপসারন সকল ক্ষেত্রেই দলীয় লোকদের ইজারা দিয়ে পুরান ঢাকাবাসীর বসবাসে সেবাদানের বদলে জুলুম অত্যাচারের শাসন-শোষণ প্রথা চালু করেছিলেন।ছাত্রজনতার গণ-আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে পালিয়ে গেলেও তার মেয়রের শাসন-শোষণ ব্যবস্থায় কোন পরিবর্তন না হওয়ায় ঢাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভ অসন্তোষ দানা বাঁধছে। আস্তে আস্তে ফুসতে শুরু করেছে রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন গুলো।এরই অংশ হিসেবে শুক্রবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন কে পতিত স্বৈরাচার সরকারের আমলে গড়ে উঠা বানিজ্যিক ভাবনা থেকে সরে এসে জনবান্ধন হওয়ার আহব্বান জানিয়েছে গণসংহতি আন্দোলন।
বক্তারা হুশিয়ারী দিয়েছেন,অন্যথায় ঢাকার নাগরিকদের নিয়ে নগর ভবন ঘেরাও দেয়া হবে।শুক্রবার বাদ জুম্মা গণসংহতি আন্দোলন ঢাকা দক্ষিণ এর উদ্যোগে আজিমপুর কবরস্থানের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন,মানুষের মৌলিক অধিকার লাশ দাফন ও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দাহ ফ্রী করতে হবে।গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য প্রধান বক্তৃতা মুনীর উদ্দীন পাপ্পু বলেন,লাশ দাফন ফ্রী করতে হবে।কবরস্থানে লাশ দাফনের নামে কোন টাকা আদায় চাদাবাজি চলবে না।সিটি কর্পোরেশন নগরবাসীর সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান। ঢাকার মূল জনসংখ্যার প্রায় এককোটি নাগরিক ঢাকা দক্ষিণে বসবাস করেন।কিন্তু সকল নাগরিক সুবিধা থেকে ঢাকাবাসী বঞ্চিত। সেবামূলক সকল কাজগুলোই বানিজ্যায়ন করা হচ্ছে।সিটি কর্পোরেশন কে এমন ভাবনা থেকে বের হয়ে আসতে হবে।কবরস্থানে লাশ দাফন ও শ্মশানে লাশ দাহ বিনা মূল্যে করতে হবে।মানববন্ধনে লালবাগ থানার আহবায়ক ইসমাইল হোসেন টিটোর সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব মো: সেলিমুজ্জামান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সংগঠক সাইফুদ্দিন আহমেদ ফায়সাল,লালবাগ থানার সদস্য সচিব বাহাউদ্দীন, চকবাজার থানার আহবায়ক মো:আলী,বংশাল থানার আহবায়ক জয় ভৌমিক,কোতয়ালী থানার আহবায়ক মো:হাসান,বংশাল থানার সদস্য সচিব আহম্মদ উল্লাহ সুমিত, চকবাজার থানার সদস্য সচিব হাসান,কোতয়ালী থানার সদস্য সচিব ফারুক হাওলাদার প্রমুখ।


ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকনের আমলে শেষ দুই বছর তিন মাস লাশ দাফন ফ্রী করা হয়েছিলো। মেয়র খোকন কর্পোরেশনে তার ঐচ্ছিক তহবিল থেকে ঠিকাদার কে লাশ দাফনের বিল পরিশোধ করতেন।একই সময়ে মৃত্যু সনদ গ্রহনে ফর্মের মূল্য ২৫ টাকা ও নকল উঠাতে মৃত্যু সনদ ফি ছিলো মাত্র ২৫ টাকা।এতে করে মৃতদের স্বজনদের মৃত্যু নিবন্ধন উঠাতে খরচ হতো মাত্র ৮৫ টাকা। মেয়র তাপস দায়িত্ব গ্রহনের পর মৃত্যু রেজিষ্ট্রেশন ফি এক লাফে একহাজার টাকা করে দেন। এ ছাড়াও স্থায়ী কবর বা কেনা কবর হিসেবে প্রচলিত প্রথা বাতিল করে মেয়র তাপস চার স্তরের লীজ প্রথা চালু করেন।দশ বছর একটি কবর সংরক্ষণ বা লীজ নিলে পাঁচ লাখ,পনেরো বছর দশ লাখ,বিশ বছর পনেরো লাখ ও পঁচিশ বছর বিশ লাখ টাকা নির্ধারণ করেন।এ ছাড়াও ব্যারিস্টার তাপস কেনা কবরে লাশ দাফনে পনেরো হাজার দুই শত টাকা থেকে বাড়িয়ে একান্ন হাজার টাকা ফি নির্ধারণ করেন।বর্তমানে আজিমপুর কবরস্থানে একটি সাধারণ কবরে লাশ দাফনে সর্বোচ্চ ষোলশত বিরানব্বুই টাকা রেজিষ্ট্রেশন ও বাঁশ-চাটাইয়ে খরচ করতে হয়।অথচ কেনা বা লীজ নেয়া কবরে দাফন খরচ হয় প্রায় তিপ্পান্ন হাজার টাকা।

আরও পড়ুন