ফেনীতে মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ১০ শতাংশ ভোটও পাবে না, এ ভয়ে শেখ হাসিনা জোর করে ক্ষমতায় থাকতে চায়। তলে তলে সমঝোতার সুযোগ নেই, এবার আর কেউ আপস করবে না। ভালোয় ভালোয় নির্দলীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। আমরা বিএনপির হাতে ক্ষমতা চাই না, জনগণের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। কথা না শুনলে ফয়সালা হবে রাজপথে।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সরকার পতনের এক দফা দাবীতে চট্টগ্রাম অভিমুখে রোডমার্চের ফেনীর মহিপালে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় মির্জ ফখরুল আরও বলেন, খালেদা জিয়া আজকে চিকিৎসার সুযোগ পাচ্ছেন না। চিকিৎসক বললেও এ ফ্যাসিস্ট সরকার বিনা চিকিৎসায় তাকে হত্যা করতে চায়। কারণ খালেদা জিয়াকে হত্যা করলে তাদের রাস্তা পরিষ্কার।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, লন্ডনে বসে শেখ হাসিনা যে বক্তব্য দিয়েছেন, কোন মানুষ এমন কথা বলতে পারে না। খালেদা জিয়া শুধু বিএনপির নেতা নন, এশিয়ার প্রথম মুসলিম নেত্রী। তিনি এদেশে সংসদীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছিলেন। মানুষের উপকার করেছেন। সেই নেত্রীকে আজকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়েছেন। এসব আমরা মেনে নিতে পারি না।
বর্তমান সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। সামনে আবার একইভাবে নির্বাচন করে ক্ষমতা ধরে রাখতে চায়। এবার আর শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন নয়, আমাদের এক দফা এক দাবি, হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। শেখ হাসিনা থাকলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। এবার যেতে হবে। এখনও সময় আছে।
মির্জা ফখরুল বলেন,বিএনপি ও সাধারণ জনগণ চায় আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব। কিন্তু আ`লীগের কথা, আমার ভোট আমি দেব, তোমার ভোটও আমি দেব। কারণ তারা জানে নির্বাচন হলে ১০ শতাংশ ভোটও পাবে না।
তিনি বলেন, আজকেও ওবায়দুল কাদেরের বাড়ির সামনে বিএনপি নেতাকর্মীদের বহরের গাড়ি ভাঙচুর করেছে। এই সন্ত্রাস করে তারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। এ আন্দোলনে বিএনপির ৬৭৫ জন গুম হয়েছে, ২৮ জন প্রাণ হারিয়েছে।
পথসভার প্রধান বক্তা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা এতদিন অহিংস আন্দোলন করেছি। কিন্তু এখন যেটা দেখতে পাচ্ছি তারা খালেদা জিয়াকে বন্দি করে নেতাকর্মীদের ওপর হামলা-মামলা করছে। আমরা এখনো সহিংসতার দিকে যাইনি। প্রতিবাদ করছি শান্তিপূর্ণভাবে। কিন্তু আগের মতো গ্রেপ্তার, গুম-খুন, বানোয়াট মামলা যদি বন্ধ না করেন প্রতিবাদ নয়, প্রতিরোধ করা হবে।
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্ল্যাহ বুলু, মোহাম্মদ শাহজাহান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঞা, জয়নুল আবদীন ফারুক, জয়নাল আবেদীন ভিপি, দলের যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী প্রমুখ।
কুমিল্লা-ফেনী-চট্টগ্রাম অভিমুখে বিএনপির রোডমার্চ ঘিরে ফেনী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ বাহারের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক এম এ খালেক, গাজী হাবিবুল্লাহ মানিক এবং আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী সঞ্চালনায় ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের মহিপালে অনুষ্ঠিত এ সভায় উপস্থিত নেতাকর্মীরা নেতৃবৃন্দের বক্তব্যের ফাঁকে ফাঁকে মুক্তি চাই মুক্তি চাই -খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই, ফেনীর মেয়ে খালেদা গর্ব মোদের আলাদা, তারেক জিয়া বীরের বেশে- আসবে ফিরে বাংলাদেশে,চোর চোর ভোট চোর,শেখ হাসিনা ভোট চোর দফা এক দাবি এক -শেখ হাসিনার পদত্যাগ শ্লোগানে পুরো সমাবেশস্থল মুখরিত করে রাখে।