মিরসরাইয়ে ভাড়া বাসায় নকল প্রসাধনী কারখানা

মিরসরাইয়ে ভাড়া বাসায় তৈরি হতো নামীদামী ব্র্যান্ডের নকল প্রসাধনী সামগ্রী। পরিবার নিয়ে থাকার কথা বলে বাসা ভাড়া নিলেও সেখানে দীর্ঘদিন ধরে তৈরি করা হচ্ছিল নকল প্রসাধনী। অবশেষে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই ভাড়া বাসায় অভিযানে মিললো নকল প্রসাধনী সামগ্রী ও তৈরির নানা উপকরণ। এসময় অভিযুক্ত একজনকে আটক করা হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে মিরসরাই উপজেলার ৩ নং জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের উত্তর সোনাপাহাড় গ্রামের শাহ মঞ্জিলে।

এ সময় নকল প্রসাধনী উৎপাদনের সাথে জড়িত জামাল উদ্দিন সিদ্দিকী (৪০) কে দেড় বছর বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। সেইসাথে ১ লাখ টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়।

জামাল উদ্দিন চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর বি-ব্লক এলাকার আকতার সিদ্দিকীর পুত্র।

বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে মিরসরাই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিজানুর রহমান ও মিরসরাই সার্কেলের এএসপি লাবিব আব্দুল্লাহ এই অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে জব্দকৃত মালামালগুলো হলো হেয়ার ওয়াশ মৌলি কসমেটিকস ৫০ পিস, জেসকো সেভিং জেল মোডলি কসমেটিকস ৬০ পিস, ফেস মেসেজ ক্রিম ৫০ পিস, পিউর কোকোনাট তেল ২০ পিস, সাইনিং হেয়ার ওয়াশ কসমেটিকস বিপিকিং ওয়াকস ৫০ পিস, সেনেটারি হ্যান্ড সেনিটাইচার ৫০ পিস ও ক্যামিক্যাল ৩ ড্রাম।

শাহ মঞ্জিলের মালিক শাহ আলম বলেন, ৩ বছর পূর্বে স্বামী-স্ত্রী থাকার কথা বলে আমার ভবনের ২৩ নং ইউনিট ভাড়া নেয় জামাল। ওই ইউনিটে ২ টি কক্ষ রয়েছে। ধারণা করছি একটি কক্ষে তারা স্বামী-স্ত্রী থাকতো অন্য কক্ষে নকল প্রসাধনী তৈরি করতো। ভাড়া দেওয়ার পর থেকে কখনো ওই ইউনিটে আমার যাওয়া হয়নি। ওই ভবনটি আমি দেখাশোনা করতাম না আমার নিয়োজিত গার্ড দেখাশোনা করতো। তবে জামালের গতিবিধি সবার কাছে সন্দেহজনক ছিল। সে কারো সাথে মিশতোও না।

জোরারগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রতন কান্তি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উত্তর সোনাপাহাড় এলাকায় মঈন উদ্দিন চৌধুরী ফিলিং স্টেশনের পূর্ব পাশে শাহ মঞ্জিল নামে একটি ফ্ল্যাট বাড়িতে অবৈধ প্রসাধনী কারখানায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ প্রসাধনীসহ একজনকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা দেওয়ার পর থানায় হস্তান্তর করা হয়। আটককৃত আসামিকে শুক্রবার কারাগারে প্রেরণ করা হবে।

মিরসরাই সার্কেলের এএসপি লাবিব আব্দুল্লাহ বলেন, জামাল উদ্দিন সিদ্দিকী দীর্ঘদিন যাবৎ লোকচক্ষুর আড়ালে রেললাইনের পাশের একটি ভাড়া ভবনে এসব ভেজাল প্রসাধনী তৈরি করে আসছে। বৃহস্পতিবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে আমি সিভিলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনওকে ফোন দিয়েছি। ইউএনও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিজানুর রহমানকে পাঠালে আমিসহ অভিযান পরিচালনা করি।

মিরসরাই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিজানুর রহমান বলেন, মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর এমন নকল প্রসাধনী তৈরির খবর পেয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করে ৮ টি কসমেটিকস তৈরির কাঁচামাল জব্দ করা হয়। এসময় জামাল উদ্দিন সিদ্দিকীকে দেড় বছর বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। সেইসাথে ১ লাখ টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে।