সাগর দাশ লাপাত্তা
“বাঁশখালীতে সাগর দাশের দখলে সরকারী অফিস” শিরোনামে দৈনিক ভোরের দর্পণ পত্রিকা ও সিটিজি সংবাদ২৪.কম এ সংবাদ প্রকাশের পাঁচদিন পর অবশেষে সরকারি অফিস দখলমুক্ত হয়েছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রমতে ‘২০১০ সালের দিকে তৎকালীন শিক্ষা অফিসার দেবাশীষ বিশ্বাস কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে এক বছরের জন্য অস্থায়ীভাবে সাগর দাশ নামে একজনকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেন। মেয়াদ শেষ হয়ে একযুগ অতিবাহিত হলেও তিনি সরকারি অফিসের কক্ষ ও সরকারি ডেস্কটপ ব্যবহার করে ব্যক্তিগত ফায়দা হাসিলে লিপ্ত রয়েছেন। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বেশ কয়েকবার অফিস ছেড়ে দিতে বললেও অফিস ছাড়েননি তিনি।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিনে অফিসে গিয়ে দেখা যায়, সাগরের কক্ষে প্রধান শিক্ষকের জটলা। তাদের হাতে বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তির প্রিন্টেড কপি। এসব কপি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকার বিনিময়ে করছেন তিনি। সরকার প্রতিটি বিদ্যালয়ে ল্যাপটপ ও প্রিন্টার সরবরাহ করলেও কেন আপনারা বাইরে কাজ করছেন, এমন প্রশ্নের উত্তরে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রধান শিক্ষক কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। উপবৃত্তি এন্ট্রি, ই-প্রাইমারি সিস্টেমে শিক্ষক তথ্য হালনাগাদসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ বাইরে না করার নির্দেশনা থাকলেও অনেক শিক্ষক তা মানছেনই না। শিক্ষকরা নিয়মিত এসব কাজ সাগরের মাধ্যমে করাচ্ছেন। এতে বিদ্যালয়ের পাসওয়ার্ড বেহাত ও শিক্ষকের কাছ থেকে বিপুল টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠে।
এ নিয়ে গত ৩০ আগষ্ট, বুধবার “বাঁশখালীতে সাগর দাশের দখলে সরকারী অফিস” শিরোনামে সংবাদটি দৈনিক ভোরের দর্পণ পত্রিকা ও সিটিজি সংবাদ২৪.কম এ একযোগে প্রকাশিত হলে রবিবার, ৩ সেপ্টেম্বর জেলা শিক্ষা অফিসার সুব্রত কুমার বণিক পরিদর্শনে এসে কড়াভাবে একদিনের মধ্যে সাগর দাশকে অফিস ছেড়ে দিতে বলেন। নতুবা তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেন তিনি। পরবর্তীতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাগর দাশ আর অফিসে আসেনি। অফিসটি তালাবদ্ধ অবস্থায় আছে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা শিক্ষা অফিসার সৈয়দ আবু সুফিয়ান বলেন, গত রবিবার ৩ সেপ্টেম্বর উপজেলা শিক্ষা অফিস কর্তৃক আয়োজিত মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা বিষয়ক মতবিনিময় সভায় আসেন জেলা শিক্ষা অফিসার সুব্রত কুমার বণিক। এ সময় বাঁশখালী শিক্ষা অফিস পরিদর্শনকালে সাগর দাশের বিষয়টি তার নজরে আসে। তিনি তাকে একদিনের মধ্যে সরকারি অফিস কক্ষ ছেড়ে দিতে বলেন। এরপর থেকে সাগর দাশ আর অফিসে আসেননি বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, তৎকালীন কয়েকজন শিক্ষা অফিসারের যোগসাজশে তিনি দীর্ঘ একযুগ ধরে বিভিন্ন অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। তৎকালীন শিক্ষা অফিসাররা তার মাসিক বেতন ভাতা বাবদ সমুদয় অর্থ ১৬০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে প্রদান করতে বাধ্য করেন। এতে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বর্তমান শিক্ষা অফিসার তা বন্ধ করে দেন।