হঠাৎ জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বাড়ানো হয়েছিল গণপরিবহনের ভাড়া। বুধবার বাস ভাড়া কিলোমিটারে পাঁচ পয়সা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সরকার। বৃহস্পতিবার থেকে নতুন এ ভাড়া কার্যকর হলেও ঢাকার গণপরিবহনে কমেনি এক পয়সাও। যাত্রীদের গুনতে হচ্ছে আগের ভাড়া। এদিকে বেশির ভাগ বাসের চালক ও তার সহকারী ভাড়া কমানোর বিষয়ে কিছুই জানেন না। বাসের মধ্যে খুচরা এই পয়সা নিয়ে চলছে যাত্রী-হেলপারের বাকবিতণ্ডা।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, ভাড়া কমানোর সিদ্ধান্ত নিলেও প্রতিটি রুটে চলাচলকারী বাসে নেয়া হচ্ছে আগের ভাড়া। সরকার প্রতি কিলোমিটারে পাঁচ পয়সা ভাড়া কমালেও তা জানেন না চালকরা। এর আগে গত ৬ই আগস্ট সরকার মহানগরীতে প্রতি কিলোমিটারে বাস ও মিনিবাসে ভাড়া ৩৫ পয়সা বাড়িয়েছিলেন। বেশির ভাগ যাত্রীরা স্বল্প দূরত্বে চলাচল করেন।
তারা পাঁচ পয়সা বাস ভাড়া কমায় পড়েছেন বিপাকে। যাত্রীদের অনেকে মনে করছেন এই পয়সা লেনদেন নিয়ে প্রতিনিয়ত তাদের পড়তে হবে বিপাকে।
অনেকে পাঁচ পয়সা ভাড়া কমানোর সিদ্ধান্তটিকে হাস্যকর বলে মনে করছেন। কাওরান বাজার থেকে মিরপুরে যাবেন রফিক। তিনি বলেন, প্রতি কিলোমিটারে যে ভাড়া কমিয়েছে তা যাত্রীরা কীভাবে লেনদেন করবে। এই পয়সার কী এখন যুগ আছে। এটা বাস মালিকদের যাত্রীদের পকেট কাটার জন্য বড় একটা পরিকল্পনা। তারা জানে এই ভাড়া কমালে যাত্রীদের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না। যাত্রীরা খুচরা টাকাটা না নিয়ে চলে যাবে। সহজে এই পয়সা দিতে চাইলে কেউ নিতে চাইবে না। চার থেকে পাঁচ কিলোমিটার গেলে ২০ থেকে ২৫ পয়সা কমবে এই কমা দিয়ে মানুষ কী করবে। মোহাম্মদপুর থেকে প্রজাপতি বাসে উঠেছেন সোহেল রানা। তিনি বলেন, বাসে তো আগের ভাড়াই নিচ্ছে। আগে ২০ টাকা দিয়ে যাওয়া-আসা করতাম আজও সেই ভাড়া দিয়েছি। হেলপারকে ভাড়া কমানোর বিষয়ে বললে সে জানে না বলে জানায়। নারগিস নামে এক যাত্রী বলেন, আগের ভাড়াই নিয়েছে। ভাড়া কমানোর বিষয়ে বাসের চালক ও হেলপার কিছুই তো বললো না।
আর যে পয়সা কমেছে তা পকেটে নিয়ে মানুষ কী করবে। এগুলো কীভাবে লেনদেন করবো। এই বাসের চালকের সহকারী সুলতান বলেন, ভাড়া কমানোর বিষয়ে আমরা এখনো কিছু জানি না। কতো টাকা কমিয়েছে সেটিও জানি না। শিকড় পরিবহনের সহকারী রোকন বলেন, বাস ভাড়া কমানো নিয়ে মালিক পক্ষ এখনো আমাদের কিছু জানায়নি। আমরা না জানলে কীভাবে কম ভাড়া নেবো। আরেক যাত্রী বলেন, ডিজেলের দাম বাড়ানোর পরপর তো বাস ভাড়া বাড়িয়েছে। তখন তো রাত থেকেই বাড়তি ভাড়া রাখা শুরু করেছে আর এখন কমছে তবুও অগের ভাড়া নিচ্ছে। এটা জনগণের সঙ্গে তামাশা করা। কিলোমিটারে পাঁচ পয়সা ভাড়া কমানোর বিষয়টিকে হাস্যকর মনে করছেন সজীব হোসেন। তিনি বলেন, এই ভাড়া কমানো না কমানো সমান। আমি কাওরান বাজার থেকে শাহবাগ যাবো। আগেও ১০ টাকা ভাড়া দিয়েছি আজও দিচ্ছি। হেলপারকে সরকার নির্ধারিত ভাড়া রাখতে বললে তিনি তর্কবিতর্ক শুরু করেন।