নিজস্ব প্রতিবেদক :: বিস্ফোরক অধিদপ্তরের সনদ ছাড়াই চট্টগ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে এলপি গ্যাস সিলিন্ডারের হাজার হাজার দোকান। আইন কানুন না মেনে শুধু মাত্র ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এই জ্বালানী ব্যবসা চলছে অহরহ। এই সব দোকানে নেই কোন আগুন নির্বাপক যন্ত্র। বড় কোন দূর্ঘটনা ঘটলে নাই কোন প্রতিকারের ব্যবস্থা। জনবহুল কিংবা আবাসিক এলাকায় ঝুঁকিপূণ এই ব্যবসার কারণে প্রায় ঘটছে দূর্ঘটনা। অনেক সময় প্রাণ হারাচ্ছে মানুষ।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, প্রচুর এলপি গ্যাস বিক্রেতারা সংশ্লিষ্ট আইন না মেনেই ব্যবসাটি চালিয়ে যাচ্ছে। ঝুঁকিপূর্র্ণ এই জ্বালানীর যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখছেন না অনেকে। আবার বিস্ফোরক অধিদপ্তরের সনদ নিলেও খুচরা ব্যবসায়ীরা সিলিন্ডার মজুদে আইন অনুসরণ করছেন না। খুচরা এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে তাদের বেশির ভাগই আইনগত বাধ্যবাধকতা সম্পর্কে অবগত নয়। তারপরও তদারকির অভাবে ঝুঁকি জেনেও তারা সনদ ও অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা ছাড়াই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়তই। কোন কোন ক্ষেত্রে লাইসেন্স প্রাপ্তির দীর্ঘ সূত্রিতা এড়াতে এবং বিভিন্ন কোম্পানীর ডিলারদের বিপনন কৌশলে প্ররোচিত হয়েও তারা আইন অনুসরণ থেকে পিছিয়ে আসছেন।
চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বিষ্ফোরক অধিদপ্তরের সনদ ছাড়াই স্থান ভেদে ৩০ থেকে শতাধিক এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিভিন্ন দোকানে মজুদ করেছে খুচরা ব্যবসায়ীরা। এসব দোকানে বিভিন্ন ব্রান্ডের এলপি গ্যাস বোঝাই সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে।
অনুসন্ধানে আরো দেখা গেছে কোথাও কোথাও ব্যবসায়ীরা বিস্ফোরক অধিদপ্তরে সনদের আবেদন করলেও সেটি পাওয়ার অপেক্ষা না করেই যেখানে সেখানে দোকান ভাড়া নিয়ে সিলিন্ডার বেচা-কেনা শুরু করেছে। বিভিন্ন স্থানে হার্ডওয়্যার সামগ্রী বিক্রেতা, মুদি দোকান, লন্ড্রি দোকান, পানের দোকান সহ বিভিন্ন দোকানে অবাধে বিক্রি হচ্ছে এলপি গ্যাস। দেশে সাধারণত উৎপাদনকারীর কারখানা থেকে ডিলার হয়ে খুচরা ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে সরাসরি ভোক্তাদের কাছে এলপি গ্যাসপূর্ণ সিলিন্ডার পৌঁছায়। এক্ষেত্রে উৎপাদনকারীরা ডিলারদের কাছে সিলিন্ডার সরবরাহের ক্ষেত্রে বিষ্ফোরক অধিদপ্তরের সনদের বিষয়টি যাচাই করে থাকেন। কিন্তু সরবরাহ আইনের দূর্বলতার কারণে সাধারণত এসব তদারকি হয়না। যদিও আইন অনুযায়ী ১০টির বেশি এলপি গ্যাস পূর্ণ সিলিন্ডার রাখলে যেকোন ব্যবসায়ীর বিষ্ফোরক অধিদপ্তরের সনদ নেয়া বাধ্যতামূলক।
এই বিষয়ে চট্টগ্রাম বিষ্ফোরক অধিদপ্তরের সহকারী বিষ্ফোরক পরিদর্শক মোঃ তোফাজ্জল হোসেন সিটিজি সংবাদ.কমকে জানায়, ১০টির বেশি এলপি গ্যাস পূর্ণ সিলিন্ডার রাখলে যেকোন ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানকে বাধ্যতামূলকভাবে বিষ্ফোরক অধিদপ্তরের সনদ নিতে হবে। সনদ ছাড়া ব্যবসা সম্পূর্ণ বে-আইনী এবং দেশের অনেকে তা মানছেন না। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া আছে। অবৈধ এলপি গ্যাস সিলিন্ডার দোকানের বিরুদ্ধে সঠিক তথ্য পেলে আমরা মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করব এমনটাই দাবী তার।