কেউ কেউ বলছেন, বিএনপি’র আন্দোলন কি আবার নতুন করে শুরু হবে। নতুন করে নয়, বিএনপির আন্দোলন চলমান রয়েছে, আন্দোলন চলছে, চলবে। ২৮ অক্টোবর আন্দোলনের কবর রচিত হওয়ার যে মিথ্যা প্রপোগান্ডা তা ইতোমধ্যে ভুল প্রমানিত হয়েছে। সরকার দিশেহারা হয়েছে বলেই উলট পালট বকে জনগণের দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহের তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। একের পর এক ভিন্ন ইস্যু তৈরী করে ভারতকে করিডোর দিয়ে দেশকে পরাধীন করে রাখার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, যা ক্ষমতায় বসানোর প্রতিদান স্বরূপ নেক্কারজনক কর্মকান্ডের একটি উদাহরণ হিসেবে বলে অভিহিত করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
শনিবার (৬ জুলাই) চট্টগ্রাম নগরীর কাজির দেউড়ীতে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন।
আমীর খসরু বলেন, দেশে বিশেষ আওয়ামী অর্থনীতির গালগপ্প চলছে। অর্থ পাচার আর দুর্নীতিতে নিমজ্জিত বর্তমান সরকার দেশকে বর্গা দিয়ে রেখেছে। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব আর গণতন্ত্রকে কবর দিয়ে তারা ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করার নীল নকশা বাস্তবায়নে কাজ করছে।
তিনি বলেন, এবার ধাক্কা সামলাতে পারবেনা। অনেক কুটকৌশল করেও নিজেদের ঘৃণ্য চেহারা ঢেকে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে অবৈধ সরকার। জনগন তাদের আসল চরিত্র চিনে গেছে। হামলা মামলা গুম খুনে আর ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করা যাবেনা। বিদেশী প্রভুদের হাতে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব সঁপে দিয়ে চিরদিন ক্ষমতায় টিকে থাকার দিবাস্বপ্ন জনগণ সফল হতে দিবে না।
খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে দেশের ৯৫ভাগ মানুষের চাওয়া-পাওয়াকে সম্মান দিন। নতুবা জনগণ আপনাদেরকে একদিন ঝেটিয়ে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত করবে।
আমীর খসরু বলেন, আমি একটা কথা বলতে চাই, অন্যায় যখন আইনে পরিণত হয়, প্রতিরোধ তখন অপরিহার্য। বাংলাদেশে কোন বিচার আছে? নাই। যেখানে কোন বিচার নাই এখানে প্রতিবাদ করে কোন লাভ আছে। তাহলে প্রতিরোধ করতে হবে। আমরা সবাই প্রস্তুত, নেতাকর্মীরা কেউ হাল ছাড়ে নাই। ঘরবাড়ি ভেঙেছে, ব্যবসা হারিয়েছে, চাকরি গেছে, জীবন দিয়েছে মামলার পর মামলা করে যাচ্ছে। পুলিশের হেফাজতে মৃত্যুবরণ করেছে, জেলে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করেছে। কেউ হাল ছাড়ে নাই, আরও বেশি শক্তিশালী হয়েছে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলুর সভাপতিত্বে ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহবুবের রহমান শামীমের পরিচালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার, এস এম ফজলুল হক, মহানগর বিএনপির সাবেক আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ভিপি হারুনুর রশীদ, ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় সদস্য সাথী উদয় কুসুম বড়ুয়া, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক এনামুল হক এনাম।
আমীল খসরু বলেন, দেশ কোথায় দাঁড়িয়ে আছে। গতকালের পত্রিকায় দেখেছিলাম, রপ্তানির ১৪ বিলিয়ন ডলার হাওয়া হয়ে গেছে। বাংলাদেশের টাকায় ১ লক্ষ ৭০ হাজার কোটি টাকা। সেটা যদি হাওয়া হয় বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধিটা হাওয়া হয়ে যাওয়ার কথা। যে উন্নয়নের রাজনীতির কথা বলছে সেটা কি আর আছে। প্রবৃদ্ধি ৫ থেকে ৪ এর নিচে চলে আসবে। খরচ আর জমার মধ্যে যে ঘাটতি সেটা আরো বেড়ে যাবে। অর্থাৎ বাংলাদেশের যে অর্থনৈতিক মানদন্ড আছে প্রত্যেক কিছুই এখন তলায় নেমে এসেছে।
আমীর খসরু বলেন, এই কৃত্রিম আওয়ামী মার্কা যে অর্থনৈতিক মডেল সৃষ্টি করেছে। দেশের মানুষের টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করে। ব্যাংক শেয়ার বাজার খালি করে দিয়ে। মেগা প্রজেক্ট এর নামে লুটপাট করে। আজকে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে পঙ্গ করে দিয়েছে। আজকে রিজার্ভে ডলার নাই। যে কারণে আজকে গ্যাস কিনতে পারছে না, তেল কিনতে পারছে না। এসবের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের মিল ফ্যাক্টরি গুরু বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। মানুষ চাকরি হারাচ্ছে। বিদ্যুতের দাম বেড়ে যাচ্ছে, গ্যাস নাই, গ্যাসের দাম বেড়ে গেছে। যে অর্থ ছিল ব্যবসার সেই অর্থ লুটপাট করে বিদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। ডলার পাচার করে দিয়েছে।