চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি’র সংবাদ সম্মেলনে ডা. শাহাদাত

বিশ্ব দেখলো অনাচার, এক মামলায় দুই বিচার

যে মামলায় বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, মির্জা আব্বাসসহ নেতাদের মুক্তি মেলে না, সে মামলায় সরকারী ইশারায় জামিন পেয়ে অনায়েসে এমপি হয়ে যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর। এটাই বিচার ব্যবস্থাকে কুক্ষিগত করে রাখার অনন্য নজির। বিশ^বাসী বাংলাদেশে আইনের শাসনের পরিবর্তে যে অনাচার চলছে তারই নজির দেখেছে বলে দাবি করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি’র আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন।

বুধবার (১৭ জানুয়ারী) চট্টগ্রাম নগরীর কাজির দেউড়ীস্থ দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।

এসময় তিনি আরও বলেন, ৭ জানুয়ারী নির্বাচনের দিন বিএনপির ডাকা হরতাল চলাকালে চট্টগ্রামের চান্দগাঁও মৌলভী পুকুর গাড় এলাকায় বিএনপির শান্তিপ‚র্ণ মিছিলে পুলিশ হামলা চালিয়ে নেতাকর্মীদের আহত করে ১২ জনকে গ্রেফতার করে। দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান, মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য এরশাদ উল্ল্যাহ, মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক মোশারফ হোসেন, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি নওশাদ আল জাসেদুর রহমান ও চান্দগাঁও থানা ছাত্রদলের সভাপতি আবদুর রহমান আলফাজ সহ ২০০/২৫০ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে চান্দগাঁও থানায় মিথ্যা মামলা দায়ের করে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নির্বাচনের পরের দিন থেকে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে চান্দগাঁও থানা পুলিশ কর্তৃক হয়রানিম‚লক অভিযান, পরিবারের সদস্যদের গ্রেপ্তার ও মারধরের ঘটনা বিরতিহীনভাবে চলে আসছে। আটককৃত নেতাকর্মী কিংবা তাদের আত্মীয় স্বজনদের থানায় নিয়ে গিয়ে অবর্ণনীয় নির্যাতন করা হচ্ছে। ওইদিন বিএনপি নেতা আবু সুফিয়ান ও এরশাদ উল্লাহসহ উল্লেখিত নেতারা ঐদিনের কর্মস‚চিতে উপস্থিত ছিলেন না, তারপরও তাদেরকে আসামী করা হয়েছে। চান্দগাঁও শরাফত উল্লাহ পেট্রোল পাম্পের ম্যানেজার জামাল উদ্দিন ঐদিন বোয়ালখালী বাড়িতে ছিলেন। তাকে ২০ নম্বর আসামি করা হয়েছে। ক্যাশিয়ার মো. হারুনকে ২১ নম্বর আসামি করা হয়েছে। ৯ জানুয়ারী মঙ্গলবার রাতে চান্দগাঁও থানা পুলিশ চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি নওশাদ আল জাসেদুর রহমানের মৌলভী পুকুর পাড়স্থ বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে না পেয়ে তার প্রবাসী বড় দুই ভাই আবেদ মাহমুদ রহমান ও ব্যাংকার জাবেদুর রহমানকে আটক করে থানায় নিয়ে নির্যাতনের পর আবেদ মাহমুদ রহমানকে বিস্ফোরক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছে। তাছাড়া চান্দগাঁও থানা যুবদলের যুগ্ম-আহবায়ক এরশাদ হোসেনের বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে না পেয়ে তার বাবা আবদুর রাজ্জাক ও বড় ভাইকে বাসায় সবার সামনে বেধড়ক মারধর করে ও বড় ভাই মো. জাবেদকে মিথ্যা মামলায় চালান দিয়েছে। এছাড়া চান্দগাঁও ওয়ার্ড যুবদল নেতা মো. আবদারের বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে না পেয়ে তার মামা মো. মামুনকে, ওয়ার্ড যুবদল নেতা জিসানকে না পেয়ে তার বাবা মো. ইলিয়াস, ওয়ার্ড যুবদল নেতা মো. শাহিনকে না পেয়ে তার বড় ভাই মো. শামিম, চান্দগাঁও থানা যুবদলের সদস্য মো. মোবারক, মোহরা ওয়ার্ড যুবদল নেতা আবদুর রাজ্জাক, যুবদল কর্মী মঞ্জুর আলম ও মো. সাইদকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার ও চান্দগাঁও ওয়ার্ড যুবদল নেতা নয়ন মাহমুদকে না পেয়ে তার বৃদ্ধ বাবা মো. ইদ্রিসকে বেধড়ক মারধর করেছে চান্দগাঁও থানা পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, বিএনপিকে নেতৃত্বশুন্য করতেই ফ্যাসিস্ট সরকার বিএনপি নেতৃবৃন্দকে ধারাবাহিকভাবে মামলা দিয়ে গ্রেফতার করছে। সরকার বিএনপির নেতৃত্বে চলমান একদফার আন্দোলনকে ভয় পায়। তাই মধ্যরাতের ভোট ডাকাত সরকার পুলিশকে দিয়ে বিএনপির শত শত নেতাকর্মীকে আসামি করে উদ্ভট মামলা করেছে। বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশের দায়ের করা মামলা পরিকল্পিত ও মিথ্যা।

এ সময় সংবাদ সম্মেলনে মহানগর বিএনপি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন