পল্টন সংঘাতের পর

ঢাকার রাজপথ আওয়ামী লীগ পুলিশের দখলে

বিএনপির গণসমাবেশ ঘিরে রাজধানীতে মহড়া দিচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে গুলিস্তানের বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ও নীলক্ষেত এলাকায় ছাত্রলীগের মহড়া চোখে পড়েছে। আদালতে মিছিল করেছেন আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরাও।

এদিকে সকালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির সম্পাদকমণ্ডলীর সঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ শাখা, সহযোগী সংগঠনসমূহের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং দুই সিটি মেয়রের যৌথসভা বসেছে। এখানেও আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছে বিএনপির সমাবেশ।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সভার স্বাগত বক্তব্যে বলেছেন, গতকাল বিএনপি নয়াপল্টনে লাশ ফেলার দুরভিসন্ধি কার্যকর করেছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সব বিভাগ, জেলা, উপজেলা, থানা, ওয়ার্ডে সতর্ক অবস্থায় থাকবে। ষড়যন্ত্রের চোরাগলি দিয়ে বিএনপি সরকার হটানোর চেষ্টা করছে। সাম্প্রদায়িক শক্তির হাতে আমরা দেশকে তুলে দিতে পারি না। এটা আমাদের শপথ। আক্রমণ আমরা করবো না, তবে আক্রান্ত হলে সমুচিত জবাব দেওয়া হবে। আমরা সরকারি দল, মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে। আমাদের যেনো কোন বদনাম না হয় আক্রমণকারী হিসেবে।

অন্যদিকে, একই দিনে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যাওয়ার পথে বিজয়নগর মোড়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

পরে তিনি সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, আমাকে পার্টি অফিসে যেতে দেওয়া হলো না।

এদিকে বিএনপির অফিসে তালা দেওয়া হয়েছে গতকালই। সেখানে যেতে দেওয়া হচ্ছে না কাউকেই। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নয়াপল্টনমুখী সবাইকে তল্লাশি করছে পুলিশ। পরিচয়পত্র দেখা হচ্ছে। জানতে চাওয়া হচ্ছে সেদিকে যাওয়ার কারণ।
পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, গতকাল (বুধবার) সেখানে পুলিশ সদস্যদের ওপর বোমা ফেলা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে পুলিশ বিএনপি কার্যালয়ের ভেতর থেকে ককটেল বোমা উদ্ধার করেছে। এটা এখন প্লেস অব অফেনস। পুলিশের ক্রাইম সিনের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সেখানে কাউকে যেতে দেওয়া হবে না। এছাড়া রাজধানীর প্রবেশদ্বারসহ বিভিন্ন পয়েন্টে সতর্ক পাহারা বসিয়েছে পুলিশ। সেখানে জনসাধারণকে তল্লাশি করতে দেখা গেছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় দলটির নেতাকর্মীদের। এতে মকবুল হোসেন (৪০) নামে একজন নিহত হন। এছাড়া আহত হন আরও ২০ জন। সংঘর্ষের সময় টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে পুলিশ। বিএনপির নেতাকর্মীরাও লাঠিসোঁটা নিয়ে পুলিশকে ধাওয়া করে। এরপর সংঘর্ষ শেষে বিএনপির কার্যালয়ে অভিযান চালায় পুলিশ।

অভিযানে বিএনপির তিন শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যেখানে কেন্দ্রীয় প্রায় আটজন নেতা রয়েছেন।

আরও পড়ুন